National

গার্লফ্রেন্ডের জন্য অটো চালান ইংরাজির অধ্যাপক

অফিসে দেরি হয়ে গেছে। পৌঁছতে হবে দ্রুত। এক বৃদ্ধ অটো চালক এগিয়ে এলেন তরুণীর দিকে। অটো চালকের ঝকঝকে ইংরাজিতে কথা চমকে দেয় তরুণীকে।

Published by
News Desk

সেদিন দেরিই হয়ে গিয়েছিল তরুণীর। অফিস পৌঁছতে হবে দ্রুত। সেই উদ্বেগটা তাঁর চোখেমুখে হয়তো ফুটে উঠেছিল। আর তা দেখেই এক বৃদ্ধ অটো চালক এসে দাঁড়ান তাঁর সামনে।

তরুণীকে জিজ্ঞেস করেন তিনি কোথায় যেতে চান? তরুণী জানান শহরের অন্য প্রান্তে তাঁর অফিসে যাবেন। তবে দেরি অনেকটা হয়ে গেছে।

বৃদ্ধ তরুণীকে অটোতে চড়তে বলেন। দরদস্তুর না করে এটাও জানিয়ে দেন তরুণী যে ভাড়া সঠিক মনে করবেন সেটাই দেবেন।

এরপর আর না করেননি ওই তরুণী। উঠে বসেন অটোতে। আর তখনই তাঁর খটকা লাগে এতক্ষণ ধরে অটো চালকের ঝকঝকে ইংরাজি বলায়।

অটো চালক হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন তরুণীর প্রশ্ন। তিনি নিজেই তরুণীকে জানান যে নিশ্চয়ই ওই তরুণীর মনে প্রশ্ন জাগছে যে কেন তিনি অটো চালান!

পেশায় গবেষক নিকিতা আইয়ার উত্তরে জানান, একদম তাই। আর তিনি জানতে চান সেই কারণ। অটো চালক বলতে শুরু করেন।‌

চালক জানান, এখন তাঁর বয়স ৭৪ বছর। গত ১৪ বছর ধরে বেঙ্গালুরু শহরে তিনি অটো চালাচ্ছেন। তার আগে তিনি থাকতেন মুম্বই শহরে। সেখানে পাওয়াই কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। পড়াতেন ইংরাজি। তাঁর নামের পাশে ডিগ্রি রয়েছে এমএ, এমএড।

কলেজে ইংরাজি পড়িয়েছেন ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত। অবসর গ্রহণের পর মুম্বই ছেড়ে চলে আসেন বেঙ্গালুরু। শুরু করেন অটো চালানো।

পট্টবি রমন নামে ওই অধ্যাপক অটো চালকের কাহিনি শুনতে শুনতে দেরির কথা ভুলেই যান নিকিতা। পট্টবি জানান, তিনি এখন তাঁর গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে থাকেন।

এই বয়সে গার্লফ্রেন্ড? তরুণী হতবাক হলেও সেই কৌতূহল দ্রুত মিটিয়ে দেন বৃদ্ধ। জানান, তিনি তাঁর স্ত্রীকেই গার্লফ্রেন্ড বলে ডাকেন। তিনি বিশ্বাস করেন স্ত্রীও গার্লফ্রেন্ডই। আর তাঁরও সমান অধিকার রয়েছে সংসারে।

একটি ঘর ভাড়া করে থাকেন পট্টবি ও তাঁর স্ত্রী। প্রতি মাসে ঘর ভাড়া ১২ হাজার টাকা। যা মেটাতে তাঁর ছেলে কিছুটা সাহায্য করেন। বাকি কোনও সাহায্য ছেলের কাছ থেকে নেন না তাঁরা।

পট্টবি জানিয়েছেন, একটি বেসরকারি কলেজে পড়িয়ে বেশি রোজগার হয়না। তাই অবসরের পরেও অটো চালিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে।

অটো চালিয়ে দিনে সাড়ে সাতশো থেকে দেড় হাজার ঘরে নিয়ে যান রমন। যা দিয়ে দিব্যি তাঁর ও তাঁর গার্লফ্রেন্ডের সংসার চলে যাচ্ছে। নিকিতা এই কাহিনি সোশ্যাল সাইটে প্রকাশ করার পর তা ছড়িয়ে পড়তে সময় নেয়নি।

Share
Published by
News Desk