National

৫ বছর আগে যে কাণ্ড দেখে লোকে মস্করা করত, সেই কাজের জন্যই এল জাতীয় সম্মান

৫ বছর আগে তাঁর কাণ্ড দেখে মানুষ হাসাহাসি করতেন। গ্রামে তাঁকে অনেকে পাগল ভাবতে শুরু করেছিলেন। সেই কাজ ৫ বছর পর এনে দিল জাতীয় সম্মান।

Published by
News Desk

স্বয়ং মন্ত্রী দেশের রাজধানীতে ডেকে তাঁকে জাতীয় সম্মানে ভূষিত করেছেন। তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। তাঁর কাজ নিয়ে নানা মহলে চর্চা হচ্ছে। তাঁর গ্রামের মানুষ, যাঁরা তাঁকে ৫ বছর আগে তাচ্ছিল্য করতেন তাঁরাই এখন ধন্য ধন্য করছেন।

সঠিক অনুধাবন ও স্থির লক্ষ্য যে মানুষকে সব বাধা পার করে স্বপ্ন ছুঁতে সাহায্য করে তার এক জ্বলন্ত উদাহরণ সমীর আনসারি।

ঝাড়খণ্ডের দেওঘরের বাসিন্দা সমীর ১৮ বছর আগে একটি খবর পড়েছিলেন। সেই খবর তাঁকে এতটাই প্রভাবিত করে যে তিনি সেই লক্ষ্যে ৫ বছর জীবনের দিয়ে দিলেন এক মনে পুকুর কাটতে।

৫ বছর আগে সমীর তাঁর গ্রামে একটি পড়ে থাকা জমিতে মাটি কাটা শুরু করেন। ভরসা কেবল একটি কোদাল আর একটি বেলচা। তাঁর কাণ্ড দেখে গ্রামের মানুষের হাসি থামছিল না।

অনেকে এটাও বোঝান যে সারাদিন যদি এভাবে মাটি কাটতে থাকেন তাহলে সংসার চলবে কীভাবে? সমীর জানিয়েছেন, রেশনের থেকে পাওয়া খাবার, শ্বশুরবাড়ির কিছু সাহায্য আর টুকটাক সাংসারিক জিনিস বাড়িতে হাতে বানিয়ে তার থেকে সামান্য রোজগার। এই দিয়েই তাঁর মা, স্ত্রী ও ২ সন্তানের খাবারের সংস্থান তিনি করে ফেলতেন। বাকি পুরো দিন মাটি কাটতেন।

বিস্তীর্ণ ওই জমিতে ২০ ফুট পর্যন্ত গভীরতা তৈরি করে তবে তিনি থামবেন। এ কাজ শেষ হতে লাগে ৫ বছর। আর সেই ৫ বছর পর এখন তাঁর গ্রামে ওই বিশাল পুকুর তৈরি।

এর আগের বর্ষায় কাজ পুরো না হলেও জল ভরেছিল। এবার তো পুকুর পুরো তৈরি। তাই বর্ষার অপেক্ষা। সমীরের এই জল সংরক্ষণের লড়াই কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রকের নজরে আসে। তাঁকে জল শক্তি মন্ত্রী দিল্লিতে ডেকে জল প্রহরী সম্মান-এ ভূষিত করেছেন।

ঝাড়খণ্ড, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের জল সংরক্ষণের বার্তা বুকে ঝুলিয়েও ঘুরে বেড়ান সমীর আনসারি। তাঁর গ্রামে তাঁর খনন করা পুকুর গ্রামের যাবতীয় জলের সমস্যা মেটাবে এ বিষয়ে নিশ্চিত গ্রামবাসীরাও। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Share
Published by
News Desk