জয়পুরে রিভলভার রানির বাড়িতে তাঁর ছেলে, ছবি - আইএএনএস
৭০-৮০ বছর আগের কথা। সেই সময় সাধারণ মহিলা রাস্তায় বন্দুক হাতে ঘুরবেন, কথায় কথায় গুলি চালাবেন। এমনকি তাঁকে গুলি চালানোর জন্য পায়ে ধরে নিয়ে যাবেন স্থানীয় মানুষ, এমনটা ভাবাই যেত না।
তখনকার কথা বাদ দেওয়া যাক, এখনও কি এটা সম্ভব! কিন্তু ব্রিটিশরা ভারত ছাড়ার ঠিক আগেই সেই রিভলভার রানি পেয়েছিলেন অনেকগুলি বন্দুকের লাইসেন্স। যার মধ্যে ছিল রিভলভার, বন্দুক, স্থানীয় বন্দুক বা চুটাঙ্কি।
কোনওটার গায়ে ছিল সোনার কাজ, কোনওটার হাতির দাঁতের। দিওয়ালীর আগে যখন দেশের মহিলারা ঘর সাজাতেন, ঘরের চারধার পরিস্কার করতেন, জয়পুরের রিভলভার রানি সৌভাগ্য কানওয়ার তখন তাঁর বন্দুক সাফ করতেন। তাও ছিল নাকি দেখার মত।
কারও পরিবারে বিয়ে থাক বা অন্নপ্রাশন বা অন্য কোনও আনন্দ উৎসব, সেখানে ডাক পড়ত রিভলভার রানির। তিনি সেখানে হাজির হতেন নিজের বন্দুক নিয়ে। তারপর গুলি ছুঁড়তেন মনের আনন্দে। বন্দুক চালনায় তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত।
এখনও তাঁর হাভেলি অর্থাৎ অট্টালিকাসম বাড়িতে তাঁর ছবির পাশে শোভা পায় রাইফেল। সৌভাগ্য কানওয়ার চলে গেছেন কিন্তু তাঁকে এখনও স্থানীয় মানুষ রিভলভার রানি বলে সম্মান করেন। বীরাঙ্গনার সম্মান পান তিনি।
তবে তাঁর ছেলের আক্ষেপ তাঁর মায়ের বন্দুকগুলির লাইসেন্স তাঁর মৃত্যুর পর নিজের নামে করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় তাঁকে। কিছুতেই নাম পরিবর্তন করা যায়নি। অগত্যা রাজস্থান গান হাউসে জলের দরে বেচে দিতে হয়েছে সেসব আগ্নেয়াস্ত্র।
যা নিছক কিছু বন্দুক নয়, একটা ইতিহাস। তিনি কেবল একটি বন্দুকের লাইসেন্স জোগাড় করতে পারেন নিজের নামে। সেটি এখনও তাঁদের বাড়িতে রয়েছে। বন্দুক বেচে দিতে হলেও রিভলভার রানি-র কাহিনি আজও মানুষের মুখে মুখে ঘোরে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা