National

৫ দিন ধরে ৫টি দেহের সঙ্গে দিন কাটাল আড়াই বছরের শিশু

এমন ঘটনা অতি বিরলের মধ্যেই পড়ে। একটি আড়াই বছরের শিশু ৫ দিন পড়ে রইল বাড়ি ভর্তি দেহের সঙ্গে। তবে ৫ দিন পরও তাকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

Published by
News Desk

আড়াই বছর বয়স যখন তখন তার এই জ্ঞানটা হয়েছে যে বাড়ির পরিচিত মুখগুলো চিনে যাওয়া। আধো আধো হলেও তাদের সম্পর্কের নাম ধরেই ডাকা। সেই পরিচিত মুখগুলো সে দেখতে পাচ্ছিল ঠিকই। কিন্তু তারা কেউ ওর ডাকে সাড়া দিচ্ছিল না।

এমনটাই তো হওয়ার কথা। বন্ধ ঘরে সে শিশু খিদেয় হয়তো কেঁদেছে। হয়তো দিদা, মা, মাসি, মামা বা দাদাকে বারবার করে ডেকেছে। কিন্তু লাভ হয়নি। কেউ ওর ডাকে সাড়া দেয়নি।

হয়তো শিশুটি মাথা তুলে দেখেছে তাদের। অনেক করে ডেকেছে তাকে কোলে নেওয়ার জন্য। কিন্তু নিথর দেহ সাড়া দেয়নি।

অবশেষে এমন করতে করতে খিদেয় তেষ্টায় এক সময় অচেতন হয়ে পড়েছে। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ তাকে খাওয়ানোর তো কেউ নেই!

এমনই এক বিরল ঘটনা ঘটে গেছে কর্ণাটকের বায়াদারাহাল্লি এলাকায়। যেখান থেকে পুলিশ ৫টি দেহ উদ্ধার করেছে। অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে আড়াই বছরের ওই কন্যা। আপাতত সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ জানাচ্ছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা জানতে পেরেছে যে বাড়ির কর্তা পেশায় সাংবাদিক শেখরের সঙ্গে তাঁর ছেলে মধুসাগরের ঝগড়া হয় গত সপ্তাহে। ঝগড়ার পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান শেখর।

তারপরই গত রবিবার বাড়ির সকলে আত্মহননের পথ বেছে নেন। বাড়িতে তখন ছিলেন শেখরের স্ত্রী ৫১ বছরের ভারতী, ৩৪ ও ৩১ বছরের ২ বিবাহিতা মেয়ে সিঞ্চনা ও সিন্দুরানি, ২৫ বছরের ছেলে মধুসাগর, ৯ বছরের নাতি ও আড়াই বছরের নাতনি। ২ মেয়েই স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে বাপের বাড়ি এসে থাকছিলেন।

পুলিশ দেহগুলি ঝুলন্ত অবস্থায় পায়। আলাদা আলাদা ঘরে পাওয়া যায় সেগুলি। ভারতী, সিঞ্চনা, সিন্দুরানি, মধুসাগর ও ৯ বছরের কিশোরের দেহ অর্ধপচা অবস্থায় উদ্ধার হয়।

গত ৩ দিন ধরে বাড়িতে ফোন করেও উত্তর না পেয়ে শুক্রবার রাতে বাড়ি ফিরে দরজা বন্ধ পান শেখর। তারপরই তিনি পুলিশ ও প্রতিবেশিদের সঙ্গে নিয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন।

তারপর যা দেখেন তারপর থেকে তিনি কথা বলার অবস্থায় নেই। মধুসাগরের ঘর থেকে উদ্ধার হয় আড়াই বছরের নাতনি।

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান অর্থনৈতিক সমস্যা ছিল না। ফলে কোনও তুচ্ছ কারণেই এই পথ বেছে নেন পরিবারের লোকজন।

শেখরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারলে আরও কিছু জানা যাবে বলে মনে করছে পুলিশ। দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Share
Published by
News Desk