National

এক গ্লাস জলের জন্য চলে গেল একটি প্রাণ

মাত্র ১ গ্লাস জল। প্রবল পিপাসায় জর্জরিত এক মধ্যবয়সী ব্যক্তির প্রাণটাই চলে গেল ১ গ্লাস জলের জন্য। আক্রোশের কাছে হেরে গেল পিপাসা।

বয়স ৫০ বছর। বিশেষভাবে সক্ষম তিনি। ভালবাসেন মাছ ধরতে। গত শুক্রবার তিনি তাঁর গ্রামেরই একটি পুকুরে গিয়েছিলেন মাছ ধরতে।

বাড়ি থেকে কিছুটা যেতে হয় পুকুর পর্যন্ত পৌঁছতে। দীর্ঘ সময় পুকুরের ধারেই কাটান ছোটে লাল সাহানি। তারপর এক সময় বাড়ির পথ ধরেন।


পড়ুন আকর্ষণীয় খবর, ডাউনলোড নীলকণ্ঠ.in অ্যাপ

ফেরার সময় তাঁর পিপাসায় গলা শুকিয়ে যাচ্ছিল। এই কাঠফাটা গরমে জল তেষ্টা পাওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জল পাবেন কোথায়!

ছোটে লাল চারিদিকে নজর রাখেন কাউকে পেলে একটু জল চেয়ে খাবেন। এই সময় তাঁর নজরে পড়ে একটি জলের কলসি। কলসিটি রাস্তার ধারেই রাখা রয়েছে।

ছোটে লাল আর থাকতে না পেরে দ্রুত পৌঁছে যান কলসির কাছে। তারপর কলসির পাশে থাকা গ্লাস তুলে তাতে জল ঢালেন কলসি থেকে। এক গ্লাস ভর্তি হলে জল পান শুরু করেন।

এদিকে ওই কলসি ছিল স্থানীয় দীনেশ সাহানি নামে এক ব্যক্তির। সে দেখতে পায় যে তার কলসি থেকে ছোটে লাল জল পান করছেন।

দীনেশ অগ্নিশর্মা হয়ে ছেলে দীপক সাহানিকে নিয়ে পৌঁছয় ছোটে লালের কাছে। তারপর কলসি থেকে এভাবে তার অনুমতি না নিয়েই জল পান করায় ছোটে লালকে মারধর শুরু করে।

বাবা ও ছেলে মিলে বেধড়ক মারধর করে ছোটে লালকে। মোটা লাঠি দিয়ে তাঁকে বেদম প্রহার করা হয়।

রক্তাক্ত অবস্থায় ছোটে লাল গ্রামের কয়েকজনের সহায়তায় বাড়ি পৌঁছন। কিন্তু বাড়ি পৌঁছনোর পর তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

ছোটে লালের স্ত্রী সময় নষ্ট না করে তাঁকে বেগুসরাইয়ের সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেও তাঁর পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। ফলে তাঁকে পাঠানো হয় পাটনা মেডিক্যাল কলেজে।

চিকিৎসকদের অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও ছোটে লালকে বাঁচানো যায়নি। মাত্র ১ গ্লাস জল পান করার সাজা পেলেন তিনি। দিতে হল প্রাণ।

ছোটে লাল ও তাঁর পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। গ্রামের লোকজনই তাঁকে পাটনা মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর টাকা চাঁদা তুলে জোগাড় করেন। পরে যখন গ্রামে তাঁর নিথর দেহ ফেরত আসে তখন তাঁর সৎকারও গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে করেন।

পুলিশ দীনেশ সাহানিকে গ্রেফতার করেছে। দীনেশের ছেলেও অভিযুক্ত। তবে সে পালিয়েছে। পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের বেগুসরাই জেলার বাদেপুরা গ্রামে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show More