National

মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এল বিশাল জলাধার, মাঝে ফোয়ারা

খনন কার্য চালাচ্ছিলেন এএসআই-এর প্রত্নতত্ত্ববিদেরাই। আর সেই খনন কাজ চালাতে গিয়ে তাঁরা পেয়ে গেলেন মাটির তলায় শত শত বছর ধরে লুকিয়ে থাকা একটি চুনাপাথরের জলাধার।

Published by
News Desk

সম্রাট আকবর নির্মিত উত্তরপ্রদেশের ফতেপুর সিক্রি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। ফতেপুর সিক্রি না দেখলে ঘোরাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়।‌ দেশবিদেশ থেকে বহু মানুষ প্রতিদিন ভিড় করেন এই ঐতিহাসিক স্থানটির মনোরম পরিবেশ ও স্থাপত্য শৈলী উপভোগ করার জন্য।

ফতেপুর সিক্রি প্রসিদ্ধ এর সুন্দর ইমারত, উদ্যান, মণ্ডপ, চোখ জুড়নো বিজ্ঞান সম্মত স্থাপত্য ও পান্থনিবাসের জন্য। বছর ১৫-র জন্য আকবর এখানে রাজধানী সরিয়ে আনেন। পরে অবশ্য ফের ফিরে যান দিল্লিতে।

ফতেপুর সিক্রির অন্যতম আকর্ষণ এর বুলন্দ দরওয়াজা। যা নির্মিত হয়েছিল আকবরের গুজরাট জয়ের নিদর্শন হিসাবে। এমনও শোনা যায় যে এই ফতেপুর সিক্রির একটি সুড়ঙ্গ দিয়েই আনারকলিকে এলাকা ছাড়া করা হয়েছিল। সেখানে সুড়ঙ্গ ধরে পালিয়ে গিয়েছিলেন আনারকলি।

সম্প্রতি এই ফতেপুর সিক্রিতে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া বা এএসআই ষোড়শ শতাব্দীর মোঘল আমলে তৈরি একটি জলাধারের খোঁজ পেয়েছে। খনন কার্যের পরই তা দেখতে পাওয়া যায়। জলাধারের একদম মাঝে একটি ফোয়ারা রয়েছে।

এএসআই আকবরের রাজসভার অর্থমন্ত্রী টোডরমল-এর বারাদরি-র সংরক্ষণের কাজ করছিল। বারাদরি হল ১২ দরজাওয়ালা এক বিশাল মণ্ডপ। বারাদরি তৈরি করা হয় এতটাই দক্ষতার সঙ্গে যাতে বায়ুর গতি না রুদ্ধ হয়।

১২টি খোলা দরজা দিয়ে বাতাস বিনা বাধায় যাতায়াত করতে পারে। টোডরমল বারাদরি সংরক্ষণের সময় ফতেপুর সিক্রির একটি অংশে খননকার্য চালান প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। সেখানেই একটি ষোড়শ শতাব্দীর মোঘল আমলের বর্গাকার জলাধার আবিষ্কার করেন তাঁরা।

জলাধারটি ৮.৭ মিটার দীর্ঘ ও গভীরতায় ১.১ মিটার। ফোয়ারাযুক্ত জলাধারটির মেঝে চুনাপাথর দিয়ে তৈরি। চুনাপাথরের প্লাস্টারের গায়ে সুন্দর নকশা ও কারুকার্য রয়েছে, জানিয়েছেন এএসআই-এর আগ্রা অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রত্নতত্ত্ববিদ বসন্ত স্মরণকর।

প্রত্নতত্ত্ববিদরা অনুমান করছেন জলাধারটি টোডরমল বারাদরি নির্মাণের সময়ই নির্মিত হয়েছিল। ফতেপুর সিক্রিতে এই ধরনের আরও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া যাবে বলে অনুমান করছেন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। তাঁরা এখানে আরও খননকার্য করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

প্রসঙ্গত টোডরমল ছিলেন মোঘল সম্রাট আকবরের রাজসভার অর্থমন্ত্রী। তিনি সম্রাট আকবরের ‘নবরত্ন সভা’-র এক রত্নও ছিলেন। টোডরমল নতুন ধরনের রাজস্ব ব্যবস্থার প্রচলন করেছিলেন। তাঁর নামেই বারাদরিটি নির্মিত হয় ষোড়শ শতকে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Share
Published by
News Desk