National

গৃহপ্রবেশে হাজির ৩ বছর আগে মৃত স্ত্রী, স্বামীর ভালবাসার অনন্য উদাহরণ

গৃহপ্রবেশে হাজির ৩ বছর আগে মৃত স্ত্রী। এমন স্বামী বোধহয় সব মেয়েরই স্বপ্ন।

Published by
News Desk

কোপ্পাল (কর্ণাটক) : নতুন বাড়ি তৈরি করেছেন তিনি। গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠানে অনেককে আমন্ত্রণও করেছে। তাঁরা নতুন বাড়িতে প্রবেশ করেই কিন্তু চমকে ওঠেন। বাড়ির গৃহিনী, যিনি ৩ বছর আগেই প্রয়াত হয়েছেন তিনি স্বয়ং বসে আছেন। দরজা দিয়ে ঢুকেই তাঁকে দেখা যাচ্ছে। পরনে গোলাপি রংয়ের বহুমূল্য সিল্কের শাড়ি। খোঁপায় ফুলের মালা। হাল্কা গয়নায় হাসি মুখে বসে আছেন তিনি। এ কি করে সম্ভব! কার্যত ভিরমি খাওয়ার জোগাড় হয় সকলের! তাঁরা সকলেই জানেন ৩ বছর আগে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় ওই মহিলার মৃত্যু হয়।

ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের কোপ্পাল জেলায়। পেশায় শিল্পপতি শ্রীনিবাস গুপ্তা। অর্থের অভাব নেই। অনেক দিন আগেই স্ত্রী মাধবীর ইচ্ছায় শুরু করেছিলেন জমি কিনে এই নতুন বাড়ি তৈরির কাজ। বাড়ি কেমন করে সেজে উঠবে, কোথায় কোন ঘর হবে, সবই ছিল তাঁর স্ত্রী মাধবীর পরিকল্পনা। মাধবীর স্বপ্নের বাড়ি তৈরি শুরু হয়েছিল। আর ঠিক সেই সময়ই গাড়ি দুর্ঘটনায় অকালে চলে যান মাধবী। স্ত্রী বিয়োগে ভেঙে পড়েন শ্রীনিবাস। তবে স্ত্রীর স্বপ্নের বাড়ি তৈরি বন্ধ করেননি। বরং তাঁর ইচ্ছা মেনেই তৈরি হয় বাড়িটি।

এরমধ্যে আরও একটি কাজ সারেন শ্রীনিবাস। স্ত্রীর স্বপ্নের বাড়িতে তাঁর অনুপস্থিতিতে গৃহপ্রবেশ হবে এটা তিনি মেনে নিতে পারেননি। এটাও মেনে নিতে পারেননি তাঁর স্ত্রী এই বাড়িতে সবসময় বিরাজ করবেননা। তাই তিনি ডেকে পাঠান শ্রীধর মূর্তি নামে বেঙ্গালুরুর এক শিল্পীকে। সেই শিল্পী ওই বাড়িতেই বসে তৈরি করতে থাকেন মাধবীর একটি মূর্তি। বাড়ির স্থপতির পরামর্শেই মূর্তিটি মোম দিয়ে না তৈরি করে সিলিকন দিয়ে তৈরি করা শুরু হয়।

ফাইল : স্ত্রী মাধবীর সঙ্গে শ্রীনিবাস গুপ্তা, ছবি – আইএএনএস

একদিকে বাড়ি তৈরি হতে থাকে। আর সেখানেই তৈরি হতে থাকে শ্রীনিবাসের স্ত্রী মাধবীর স্ট্যাচু। মাধবীকে পূর্ণ রূপ দিতে ওই শিল্পীর ১ বছর সময় লাগে। অবশেষে গৃহপ্রবেশের দিন সেই মূর্তি সকলের সামনে আনা হয়। একটি সোফায় ঠোঁটের কোণে একটা তৃপ্তির হাল্কা হাসি নিয়ে বসে আছেন মাধবী। যা দেখে কারও বলার উপায় নেই যে তিনি আসল মাধবী নন, তাঁর স্ট্যাচু।

মূর্তির পাশে বসে শ্রীনিবাস অনেক ছবিও তোলেন। এই স্ট্যাচুকে দীর্ঘদিন একই অবস্থায় রাখতে সেটিকে সিলিকন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। মোম হলে কর্ণাটকের গরমে তা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। স্বামীর স্ত্রীর প্রতি এই ভালবাসার খবর এখন ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে। শ্রীনিবাস জানিয়েছেন ওই বাড়িটিতে ওই মূর্তি সবসময় থাকবে। ওই বাড়ি তাঁর স্ত্রী মাধবীর। তিনিই ওই বাড়ি কর্ত্রী হয়ে থেকে যাবেন চিরদিন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Share
Published by
News Desk