National

মা-মেয়েকে পিটিয়ে মারল জনতা, কোনওক্রমে পালিয়ে বাঁচলেন বাবা-ছেলে

Published by
News Desk

তখন রাত। গ্রাম শান্ত। আচমকাই একটি বাড়ির ওপর চড়াও হয় সেই বাড়ির প্রতিবেশি পরিবার। তাদের সঙ্গে যোগ দেন গ্রামের আরও কিছু মানুষ। অবস্থা নিমেষে অশান্ত হয়ে ওঠে। চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়। মারমুখী গ্রামবাসীরা ওই পরিবারের ৪ সদস্য বাবা-মা ও তাঁদের ২ সন্তানকে টেনে বার করে আনেন। সকলে ওই পরিবারের মা ও মেয়েকে ডাইনি বলে অপবাদ দিতে শুরু করেন। তারপর শুরু হয় মার। তাঁরা বাঁচার জন্য আকুতি মিনতি করলেও ছাড় পাননি। এর মধ্যে বাবা ও ছেলে মারমুখী জনতার হাত ছাড়িয়ে পালাতে সক্ষম হলেও মা ও মেয়ের সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তাঁরা গ্রামবাসীদের হাতে পড়ে যান। ২ মহিলাকে যথেষ্ট মারধর শুরু করেন গ্রামের নারী পুরুষ নির্বিশেষে। গ্রামের পুরুষরাও ২ মহিলার সঙ্গে চূড়ান্ত অশ্লীল আচরণ করে তাঁদের মারতে থাকেন বলে অভিযোগ। ক্রমশ রক্তাক্ত হতে থাকেন মা ও মেয়ে। তারপর সারা শরীর জুড়ে গভীর ক্ষত নিয়ে ক্রমশ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তখনও তাঁদের ডাইনি অপবাদ দিয়ে মার চলছে।

বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে ঝাড়খণ্ডের পশ্চিম সিংভূম জেলার রোয়াউলি গ্রামে। রাতেই মা ও মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বাবা ও ছেলে কোনওক্রমে উন্মত্ত জনতার হাত ছাড়িয়ে পালানোর পর রাতভর লুকিয়ে থাকেন। শুক্রবার সকালে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন সুভাষ খণ্ডাইত। ছেলেকে নিয়ে তিনি তখনও ভয়ের মধ্যে।

পুলিশকে সুভাষ খণ্ডাইত জানান, গত সোমবার তাঁর বাড়িতে একটি পুজো ছিল। সেই পুজোয় অন্যদের সঙ্গে আসেন তাঁদের প্রতিবেশি রামবিলাসের স্ত্রী। তিনি পুজো শেষ হওয়ার পর বাড়ি ফিরে যান। আর বাড়ি ফেরার পর থেকেই রামবিলাসের স্ত্রী অসুস্থ অনুভব করতে থাকেন। সেখান থেকেই রামবিলাসের পরিবারের মনে হয় তাঁর স্ত্রী ও কন্যা ডাইনি। আর সেই ডাইনি অপবাদ দিয়ে তাঁদের এমন নৃশংসভাবে হত্যা করেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পশ্চিম সিংভূম জেলার এই অঞ্চল মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি বলেও পরিচিত। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Share
Published by
News Desk