National

মারণ ভাইরাস ‘নিপা’-র হানায় বাড়ছে মৃতের সংখ্যা

Published by
News Desk

আতঙ্কের নাম ‘নিপা’। চরিত্র ভাইরাস। ভূমিকা প্রাণঘাতী। সম্ভাব্য উৎপত্তির কারণ বাদুড়। আবির্ভাব ২ সপ্তাহ আগে। শিকারের সংখ্যা ১৩। মৃতেরা সকলেই কেরালার বাসিন্দা। মূলত দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যটিতেই তাণ্ডব চালাচ্ছে নিপা। অজানা এই ভাইরাস যাঁর শরীরে বাসা বাঁধছে, তিনি ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছেন মৃত্যুর দিকে। নিপার দৌরাত্ম্যের কাছে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে কেরালা স্বাস্থ্য পরিষেবা। নিপাকে থামাতে কোনও আশার আলো খুঁজে পাচ্ছেননা চিকিৎসকরা। অজানা রোগে মৃত্যুভয় এখন কুরেকুরে খাচ্ছে কেরালাবাসীকে। সবথেকে বেশি প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে কেরালার কোঝিকোড় অঞ্চল থেকে। এখানে প্রবল জ্বরে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। যাঁদের মধ্যে আছেন ১ জন ৩১ বছর বয়সী নার্সও। মৃতদের প্রত্যেকের শরীরে নিপার জীবাণু পাওয়া গেছে।

কেরালা জুড়ে নিপা মহামারির আকার ধারণ করায় জারি হয়েছে হাই অ্যালার্ট৷ গোটা বিষয়টির তদন্তের জন্য গঠন করা হয়েছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জেপি নাড্ডা। বৈঠকে চিকিৎসকদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের টিম গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের প্রায় প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলিতে উপচে পড়ছে রোগীদের ভিড়। কারোর সাধারণ জ্বর হলেও ভয়ে চিকিৎসকের কাছে ছুটে যাচ্ছেন। রোগীর শরীরে সংক্রমণের কারণ বুঝতে চিকিৎসকের লেগে যাচ্ছে ৪-৫ দিন সময়৷ ততদিনে শরীরে ভাইরাস ছড়িয়ে গিয়ে কখনও রোগীরা চলে যাচ্ছেন কোমায়। কখনও রোগ বুঝে ওঠার আগেই রোগীর মৃত্যু ঘটে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা৷ ফলে তাঁদের করার কিছুই থাকছে না।

প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা, জ্বর, দুর্বলতা, অস্থিরতা, বমি ও ঝিমুনি ভাব নিপার প্রাথমিক উপসর্গ। এই রোগ সরাসরি মস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটায়৷ তাই এখন স্বাভাবিক জ্বর বা মাথা ব্যথা হলেও আতঙ্কে তড়িঘড়ি হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে ছুটে যাচ্ছে পরিবার। ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ায় প্রথম এই ভাইরাস চিহ্নিত হয়। ভারতে ২০০১-এ পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে আবির্ভূত হয় এই ভাইরাস। তবে সেবারে সে এতটা ভয়ংকর চেহারা নেয়নি। কিন্তু এবারে নিপার বাড়াবাড়িতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কেরালা প্রশাসনের। বাতাসে নয়, নিপার আক্রান্ত রোগী মারফত ভাইরাস ছড়ানোয় মৃত্যুর সংখ্যা হুহু করে বাড়তে পারে বলে মনে করছে কেরালার স্বাস্থ্য দফতর।

Share
Published by
News Desk