National

৪০০ বছরে প্রথমবার মন্দিরে পা দিলেন পুরুষরা

Published by
News Desk

কেরালার শবরীমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াইয়ের কথা দেশবাসীর জানা। কিন্তু এই দেশেই তথাকথিত পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এমন একটি মন্দির রয়েছে যেখানে গত ৪০০ বছর ধরে পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ ছিল!

ওড়িশার কেন্দ্রাপাড়া জেলার সত্যভয়া গ্রামের মা পঞ্চুবরহীর মন্দিরে কিন্তু গত ৪০০ বছরে কোনও পুরুষ প্রবেশ করতে পারেননি। ‘পবিত্রতা’ বজায় রাখতে মন্দিরটিতে প্রবেশের অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন পুরুষরা। এই ৪০০ বছরে মন্দিরের ঐতিহ্য মাথা পেতে মেনেও আসছেন সকলে।

স্থানীয়দের উপাস্য পঞ্চুবরহী দেবীর মন্দিরের সর্বত্র একমাত্র নারীদের অবাধ যাতায়াত। মহিলা ব্যতীত অন্য লিঙ্গের কারোর প্রবেশাধিকার নেই সেখানে৷ দেবীকে তুষ্ট করতে নিত্য পুজো হয় মন্দিরে। পুরুষ ব্রাহ্মণ দিয়ে নয়। এই গ্রামে ব্রাহ্মণ্যবাদের একাধিপত্য অচল। গ্রামের ৫ বিবাহিত দলিত মহিলা পূজারিই দেবীর নিত্যসেবার দায়িত্ব পালন করে আসেন। মন্দিরের সমস্ত কাজও তাঁদেরই হাতে। ৪০০ বছরের মধ্যে ১ দিনের জন্যও এই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি। পুরুষরা দূর থেকে দেবীকে অন্তরের ভক্তি ও আকুতি নিবেদন করে এসেছেন। সময়ের ভ্রূকুটিতে এমন ইস্পাত কঠিন প্রথায় সাময়িক ভাঙ্গন ধরল সম্প্রতি।

বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী মন্দিরটি ভাঙনের কবলে পড়েছে। উষ্ণায়নের জেরে বৃদ্ধি পেয়েছে সমুদ্রের জলস্তর। সেই নোনা স্রোতের ধাক্কা রোজ একটু একটু করে নাড়িয়ে দিয়ে চলেছে মন্দিরের ভিত। অবস্থা এমন যে আর কিছুদিনের মধ্যেই চিরকালের জন্য দেবীর মন্দির হারিয়ে যাবে সমুদ্রগর্ভে। তাই দেবীবিগ্রহকে বাঁচাতে তাঁকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু দেড় টন কষ্টিপাথরের একেকটি মিলিয়ে মোট ৫টি দেবীমূর্তিকে স্থানচ্যুত করা সম্ভব হয়নি মহিলা পুরোহিতদের পক্ষে। অতঃপর নিমরাজি হলেও ডাক দিতেই হয় গ্রামের ৫ পুরুষকে। তাঁদের সহায়তায় মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে সরানো হয় দেবী পঞ্চুবরহীর কষ্টিপাথরের বিগ্রহকে৷ নৌকা করে দেবীকে নিয়ে যাওয়া হয় অনতিদূরের বাগাপাতিয়া গ্রামের মন্দিরে৷ সেখানে দেবীর বিশুদ্ধিকরণের মধ্য দিয়ে দেবীকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়।

Share
Published by
News Desk