তরমুজ খেতে কার না ভাল লাগে! টুকটুকে লাল রসালো তরমুজের স্বাদ অমৃতসমান। ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা তরমুজ আইসক্রিমকেও যেন টেক্কা দেয়। সেই তরমুজের বরফের ‘ফ্লেভার’ নিয়ে এবার হাজির খোদ প্রকৃতি! বুঝতে পারলেন না তো কি বলতে চাইছি?
প্রকৃতি যে কত রহস্যময় আমেরিকার মন্টানা অঞ্চলের ‘দ্য গ্রিনেল গ্লেসিয়ার ন্যাশনাল পার্ক’-এর সাম্প্রতিক ভোজবাজি তার প্রমাণ। সেই পার্কে দুধসাদা বরফের রং বেমালুম গেছে পাল্টে। একদম তরমুজের শাঁসের মত লাল হয়ে গেছে সাদা বরফ। দেখে মনে হচ্ছে, যেন কেউ তরমুজের রং মিশিয়ে দিয়েছে বরফে।
প্রকৃতির এমন ভানুমতীর খেলে তাজ্জব বনেছেন বিজ্ঞানীরাও। তরমুজের মত গোলাপি লাল আভাযুক্ত বরফের একটা যুতসই নামও দিয়েছেন তাঁরা। ‘ওয়াটারমেলন স্নো’, বাংলায় বললে দাঁড়ায় ‘তরমুজ তুষার’।
কেন হঠাৎ বরফের রং পাল্টে এমন লাল হয়ে উঠল? সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে উঠে পড়ে লাগেন একদল বিজ্ঞানী। দেখা যায়, বরফকে এমন রাঙিয়ে তোলার পিছনে রয়েছে এক বিশেষ ধরণের শ্যাওলার কারসাজি। লাল রঙের সেই শ্যাওলা বিজ্ঞানের জগতে ‘ক্ল্যামাইডোমোনাস নিভালিস’ নামে সুবিদিত।
এই শ্যাওলা কোনওভাবে মিশে গিয়েছিল জমাটবাঁধা বরফের সাথে। গরম পড়তেই আমেরিকার ওই পার্কের জমা বরফ গলতে শুরু করেছে। আর সেই কারণেই কঠিন বরফের পুরু আস্তরণের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছে রক্তিম শ্যাওলার রং। তবে কেবল রঙেই নয়, হাল্কা মিষ্টি সুবাসেও এই শ্যাওলা কিন্তু মন জয় করে নিয়েছে বিজ্ঞানীদের। সুন্দর রঙের সাথে সাথে শ্যাওলার নিজস্ব মিষ্টি গন্ধ মাতিয়ে তুলেছে জমাটবাঁধা বরফের চারপাশ।
তবে এসবের মাঝখানেও অবশ্য মনমরা হয়ে পড়েছেন গবেষকরা। গ্রীষ্মের আগেই দ্রুত গলতে শুরু করেছে তরমুজ তুষার। তাই বেশি দিন হয়তো আর দেখা যাবেনা প্রকৃতির এই অদ্ভুত খেলা।