Kolkata

সত্যাগ্রহের ডাক দিয়ে রাতেই ধর্নায় বসলেন মুখ্যমন্ত্রী

Published by
News Desk

রবিবার সন্ধেয় লাউডন স্ট্রিটে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে ঢুকতে যান ডিএসপি তথাগত বর্ধনের নেতৃত্বে সিবিআইয়ের ৪০ জন আধিকারিক। তাঁদের পথ আটকান পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। এই সময় কিছুটা কথা কাটাকাটি হতে দেখা গেছে দুপক্ষে। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে থেকেও রাজীব কুমার পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি সিবিআই আধিকারিকরা। এরপর তাঁদের একটি দল প্রথমে পার্ক স্ট্রিট থানায় যায়। তারপর রাজীব কুমারের বাড়ি যে থানার অন্তর্গত সেই শেক্সপিয়র থানায় হাজির হন তাঁরা। কলকাতা পুলিশের তরফে দেখার চেষ্টা হয় তাঁদের কাছে পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে ঢোকার মত প্রয়োজনীয় কাগজ আছে কিনা। অন্যদিকে পুলিশ কমিশনারের বাড়ির সামনে পুলিশ ও সিবিআই আধিকারিকদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। কিছুটা ধস্তাধস্তির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে সিবিআই আধিকারিকদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও সিবিআইয়ের দাবি তারা নিয়ম মেনেই তদন্তে এসেছিল। পরে অবশ্য আটক হওয়া আধিকারিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

সন্ধের এই নাটকীয় পরিস্থিতির পরই রাজীব কুমারের বাড়িতে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম সহ অনেকে। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর বেরিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁর দাবি, পুরোটাই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের নির্দেশে। কেন্দ্রের নির্দেশেই সিবিআই অহেতুক রাজীব কুমারকে হেনস্থা করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকেও ভুল খবর দিয়ে কেন্দ্র ‌প্রতারিত করছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন সারদাকাণ্ডের তদন্তে যে সিট গঠন করা হয়েছিল তার নেতৃত্বে ছিলেন রাজীব কুমার। সেখান থেকেই তাঁকে হেনস্থার চেষ্টা করছে সিবিআই। মুখ্যমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এরপর তো এক এক করে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিবের বাড়িতেও সিবিআই পাঠানো হবে। ভোট এলেই সিবিআই দিয়ে কেন্দ্র ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এভাবে বিভিন্ন সংস্থাকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সিবিআই আধিকারিকরা এদিন কোনও সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়াই পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে হাজির হন বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।

বিজেপির বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, ছবি – আইএএনএস

মুখ্যমন্ত্রী এদিন দাবি করেন, গণতন্ত্র বিপন্ন। সংবিধান বিপন্ন। তাই বিভিন্ন প্রশাসনিক সংস্থাকে বাঁচাতে, সংবিধানকে বাঁচাতে ও এই ঘটনার বিহিত চেয়ে তিনি এদিন থেকে ধর্নায় বসছেন। যা হবে সত্যাগ্রহের মত। মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসার কথা জানান তিনি। তারপরই পুলিশ কমিশনারের বাড়ির সামনে থেকে থেকে মেট্রো চ্যানেলে পৌঁছে ধর্নায় বসেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম সহ অন্য নেতারা। যেখানে ধর্নায় বসলেন তার পাশেই একটি ঘর করা হচ্ছে। সেখানেই মন্ত্রিসভার বৈঠক করে সোমবার রাজ্য বিধানসভায় বাজেট পেশের সব নিয়ম সম্পূর্ণ করবেন তিনি।

এদিন আবার রাজ্যে সিবিআই সদর দফতর সিজিও কমপ্লেক্স ও নিজাম প্যালেস ঘিরে নেয় বিধাননগর কমিশনারেট ও কলকাতা পুলিশ। পরে পুলিশ সরে গেলে ২টি জায়গারই দায়িত্ব নেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। যেভাবে কেন্দ্র ও রাজ্যের সংঘাত সামনে এসে পড়ল তাতে ভোটের মুখে রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে উঠেছে। রাজ্য জুড়ে তৃণমূল এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নামছে বলেও খবর।

(সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা)

Share
Published by
News Desk

Recent Posts