Lifestyle

টমেটো দিয়ে পোশাক, ব্যাগ তৈরির রাস্তা খুললেন যুবক, টমেটোই কেন তাও জানা গেল

অনেকদিন ধরেই চামড়ার পরিবর্তে অন্য জৈব উপাদান দিয়ে নতুন কিছু করার একটা চিন্তাভাবনা ছিলই। সেই পথেই হাঁটলেন দেশের এক প্রতিভাবান যুবক। বেছে নিলেন টমেটোকে।

টমেটো থেকে জুতো, ব্যাগ ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বানানো হচ্ছে। কিন্তু এই অসাধ্যকে সাধন করে ছেড়েছেন দ্যা বায়ো কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ২৬ বছর বয়সী প্রীতেশ মিস্ত্রি। মুম্বইয়ের থাডোমল সাহানি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে বায়োটেকনোলজিতে স্নাতক হওয়ার পর একইসঙ্গে পরিবেশ রক্ষা ও ফ্যাশনেবল জিনিস বানানোর চিন্তায় তিনি এই অভিনব কাজ শুরু করেন। এতে একদিকে যেমন অপচয় বন্ধ করা যায় তেমনই দূষণ নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব হয়।

বয়ন শিল্পের জগতে জৈব চামড়া এক অভাবনীয় বিপ্লবের সূচনা করেছে। ২০২১ সালে তা পেটা ভেগান ফ্যাশন অ্যাওয়ার্ডস-এ স্বীকৃতিও পেয়েছে। জৈব চামড়া আসলে উদ্ভিজ্জ উপাদান থেকে তৈরি এক ধরনের পদার্থ।

ভারতে মহারাষ্ট্র, গুজরাট এবং মধ্যপ্রদেশে প্রতিবছর প্রায় ৪৪ কোটির কাছাকাছি টমেটো উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশের মত নষ্টই হয়ে যায়। তাই প্রাথমিকভাবে এই অপচয় ঠেকাতে টমেটো বর্জ্য থেকে ফ্যাশনেবল জিনিসপত্র বানানোর কথা চিন্তা করেন প্রীতেশ।

টমেটোকে প্রাথমিক উপাদান হিসাবে রেখে তার সাথে পলিইউরেথিন এবং পলিভিনাইল ক্লোরাইড মিশিয়ে জৈব চামড়া নামের এই নতুন পদার্থটি তৈরি করা হয়। এটি প্রাণিজ চামড়ার বিকল্প হিসাবে তৈরি হয়েছে। একে সম্পূর্ণভাবে টেকসই করার জন্য টমেটোর খোসা আর বীজকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। এখানে কোনও প্রাণির ক্ষতি না করেই কাজটি করা সম্ভব।

এছাড়া টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে পেকটিন থাকে। এটি একটি প্রাকৃতিক পলিমার জাতীয় উপাদান যা একইসাথে নমনীয় এবং পোক্ত। এর ভিতরের তন্তু ও প্রাকৃতিক তেল থেকে চামড়ার মত একটি পদার্থ সৃষ্টি হয়। এর সাথে প্রাকৃতিক রঙ মিশিয়ে চর্মজাত পদার্থগুলিকে রঙিন করা হয়।

২০১৯ থেকে এই টমেটোজাত জৈব চামড়া তৈরি করা শুরু হয়। প্রথমদিকে জ্যাকেট, ব্যাগ, জুতো তৈরি দিয়েই কাজ শুরু হয়। ফ্যাশনের জগতে এসব চর্মজাত দ্রব্য সহজেই নিজের জায়গা করে নেয়।

অত্যাধুনিক অথচ পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় ২০২৪-এর মধ্যে বহু ডিজাইনিং ব্র্যান্ড একে আপন করে নেয়। চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে প্রীতেশ মিস্ত্রির দ্যা বায়ো কোম্পানি সুরাটের কারখানায় প্রতিমাসে টমেটো দিয়ে ৫ হাজার মিটার করে জৈব চামড়া তৈরি করছে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *