Kolkata

সকাল থেকে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক অমিল, বেলা গড়াতেই বদলাল ছবি

Published by
News Desk

ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা দেশজুড়ে ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাকে যতটা প্রভাব রাজ্যে পড়বে বলে মনে হয়েছিল, ততটা পড়ল না। বেলা গড়াতেই রাজ্য সরকারের কড়া বার্তায় চিকিৎসকেরা কাজে যোগ দিলেন। তবে বুকে কালো ব্যাজ পড়ে। সেটাই ছিল এদিন তাঁদের প্রতিবাদের ভাষা। তবে চিকিৎসকেরা কাজে যোগ দিলেও তৃণমূল কংগ্রেস এদিন সংসদের দুই কক্ষে এই বিলের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়। যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এদিন সংসদে দাবি করেন, তিনি আইএমএ-এর সঙ্গে কথা বলে সব ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিয়েছেন। তবে মন্ত্রী যাই বলুন না কেন, এদিন দেশের বিভিন্ন রাজ্যে চিকিৎসা পরিষেবায় বন্‌ধের যথেষ্ট প্রভাব পড়ে।

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে সকালের দিকে বন্‌ধের প্রভাব পড়ে মারাত্মক। ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৯টা। জেলায় জেলায় হাসপাতালের বাইরে রোগীদের লম্বা লাইন। ডাক্তার দেখাতে হাতে টিকিট ধরে অপেক্ষারত কয়েকশো রোগী ও তাঁদের পরিবার। সকাল ১১টা। তখনও সেই একই ছবি। ততক্ষণে রোগী ও তাঁদের পরিবারের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। আদৌ ডাক্তারবাবুরা আসবেন তো? যেমনটা ভাবা হয়েছিল, মঙ্গলবার সকাল হতেই সেই আশঙ্কা পরিণত হল বাস্তবে। দেশজুড়ে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা ১২ ঘণ্টার কর্মবিরতির প্রভাব পড়ল এ রাজ্যেও। সকাল থেকে দূরদূরান্তের রোগীদের হাপিত্যেশ করে বসে থাকতে দেখা গেল রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে।

গত শুক্রবার পেশ হয় কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন ‘ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল বিল’। এই বিল কার্যকর হলে একশ্রেণির ‘হাতুড়ে ডাক্তার’ তৈরি হওয়ার আশঙ্কায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন চিকিৎসকদের একাংশ। শুধু তাই নয়, নতুন প্রস্তাবিত বিল স্বাস্থ্যশিক্ষায় রাজনীতিকরণ ঘটিয়ে দুর্নীতির জন্ম দেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা। তারই প্রতিবাদে মঙ্গলবার দেশ জুড়ে কালাদিবসের ডাক দেয় ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। ফলে সকাল থেকেই রোগী দেখায় গড়িমসি দেখাতে থাকেন চিকিৎসক মহল। স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবে তা ফাঁকা আওয়াজেই পরিণত হতে দেখা যায়। তবে ধর্মঘটে সাড়া না দিয়ে রোজকার মত রোগীদের সেবায় নিয়োজিত থাকতে দেখা যায় শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের জেলা হাসপাতালগুলির চিকিৎসকদের। পরের দিকে অন্যান্য জেলার সরকারি হাসপাতালগুলিতে বুকে ‘কালো ব্যাজ’ ঝুলিয়ে রোগী দেখা শুরু করেন চিকিৎসকদের একাংশ।

সূর্য মাথার উপরে উঠতেই রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়ে আন্দোলন। বদলে যায় হয়রানির চিত্রটা। ধর্মঘটের নামে সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করা যাবে না। প্রশাসনের কড়া নির্দেশে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরে কলকাতা, বাঁকুড়া, বর্ধমান, বীরভূমসহ একাধিক জেলার সরকারি হাসপাতালগুলি। তবে দেশের নানা প্রান্তে এখনও চিকিৎসকদের কালাদিবসের কোপে নাজেহাল অবস্থা রোগীদের।

Share
Published by
News Desk

Recent Posts