Kolkata

সুভাষ মেলায় আনন্দের অভাব নেই, মুখে মাস্ক অবশ্য বিরল

শহরের মেলাগুলির অন্যতম সুভাষ মেলা। গোটা মেলা চত্বর জুড়ে কোণায় কোণায় আনন্দের পসরা। বিনোদনের অভাব না থাকলেও অভাব কেবল মাস্কের।

কলকাতা : শীতের মরশুমে কনকনে উত্তুরে হাওয়ার দাপট যেমন থাকে তেমনই থাকে হরেক রকম আনন্দের রসদ। ঘুরতে যাওয়া, খাওয়া দাওয়া, পিকনিক আর আড্ডার শ্রেষ্ঠ সময় শীতকাল। তাই শীতকালে মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য শহরে, গ্রামগঞ্জে গজিয়ে ওঠে হাজার একটা মেলা।

রূপ রস গন্ধে ভিন্ন মেলাগুলোর উদ্দেশ্যটা কিন্তু একই থাকে – কর্মব্যস্ত মানুষের দুশ্চিন্তাময় জীবনে কিছুক্ষণের জন্য একটু খুশির রঙ ছড়িয়ে দেওয়া। তাই যেন মেলাগুলো বেশি করে বিচিত্র আর উজ্জ্বল রঙে সেজে ওঠে।

ফাঁকা মাঠগুলোর লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠতে বেশি সময় লাগে না। শুধু বাঁশ পুঁতে, আলো দিয়ে দোকান সাজিয়ে বসতে যেটুকু সময় লাগে দোকানির।

মেলার প্রাণই মানুষ। তাই মানুষের মনোরঞ্জনের যাবতীয় সরঞ্জামের ডালি সাজিয়ে উপস্থিত হয় মেলা। শহর হোক কি গ্রাম – মেলা নিয়ে কোনও জায়গাতেই মানুষেরই উৎসাহের ঘাটতি নেই।

করোনা পরিস্থিতি মানুষের আমোদ-আহ্লাদে বাধ সাধলেও পুরোপুরি সফল হতে পারেনি। অতিমারির কঠিন সময় পেরিয়ে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতেই মানুষ আবার পুরনো উদ্যম নিয়ে নেমে পড়েছেন অবসর উদযাপনে।

আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা পিছিয়ে জুলাইয়ে হয়ে যাওয়াটা কিছুটা আশাহত করেছে বইপ্রিয় বাঙালিকে। তবে অনেক মেলাই কিন্তু যথা নিয়মে আয়োজিত হচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম হল কাঁকুড়গাছির সুভাষ মেলা।

এবছরও যথারীতি ২৩ জানুয়ারি কাঁকুড়গাছির এপিসি পার্কে শুরু হয়ে গেছে সুভাষ মেলা। চলবে ১ মাস। ফলে ক্রমে তা শেষের দিকে এগোচ্ছে।

এখনও বেশ কিছু দিন বাকি। তার আগে মেলাকে কেন্দ্র করে উৎসাহে এতটুকু ভাটা নেই। বিকেল নামলেই মেলার প্রাঙ্গণ জমে উঠছে মানুষের ভিড়ে। আর তা সন্ধে নামার পর কার্যত উপচে পড়ছে।

মেলায় সার দিয়ে দোকানিরা, ছবি – অনন্যা সরকার

যেটা চিন্তার, একটি মাঠে এত মানুষের ঢল নামছে, কিন্তু অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। আর ভিড়ের চাপে দূরত্ব বিধি কার্যত শিকেয়। যদিও মেলায় ঢোকার নিয়মে রয়েছে মুখে অতি অবশ্যই মাস্ক থাকার সতর্কতা। কিন্তু সেসব প্রায় কেউই মানছেন না, আর তা মানানোর তাগিদও যে বড় একটা রয়েছে, তা এ মেলায় চোখে পড়েনি।

সুভাষ মেলার সুবিশাল মাঠ জুড়ে বসেছে অগুন্তি স্টল। ঝলমলে আলোয় মোড়া গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলেই মনটা আনন্দে ভরে ওঠে। গেট পেরোলেই রাস্তার দুপাশে বিভিন্ন জিনিস নিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।

মেলায় ঘুরতে আসা মানুষরা এখান থেকেই কেনাকাটা শুরু করে দিচ্ছেন। তারপর প্রধান মেলা প্রাঙ্গণ সাজিয়ে রেখেছে হরেক আনন্দের সম্ভার। মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকলেই জমজমাট মেলার আবহাওয়া অনুভব করা যায়। সবার জন্যই মেলা সাজিয়ে রেখেছে কিছু না কিছু।

খেলনা থেকে বই, টুপি থেকে আচার, ঘর সাজানোর আসবাব থেকে ইমিটেশন গয়না, কি নেই! মোটামুটি সব স্টলেই একবার করে ঢুঁ মেরে নিচ্ছেন সবাই।

কৃত্রিম ফুলের পসরা নিয়ে দোকানি, ছবি – অনন্যা সরকার

কেউ কেউ আবার রীতিমত দরদাম করতে ব্যস্ত। দরদামের বিড়ম্বনা এড়ানোর জন্য আবার কোনও কোনও দোকানি স্টলের সামনে ঝুলিয়ে দিয়েছেন ‘ফিক্সড প্রাইস’-এর বোর্ড। পরখ করে সেরাটা বেছে নেওয়ার উদ্যম যেমন আছে তেমনই আছে শুধুই নেড়ে চেড়ে দেখার আনন্দ।

অনেক কচিকাঁচাই বাবা-মায়ের হাত ধরে উপস্থিত হয়েছে মেলায়। স্টলের চেয়ে রাইডে চড়ায় তাদের উৎসাহ বেশি। নানারকম রাইডের মধ্যে নজর কাড়ে বিরাট বড় ঝুলন্ত ড্রাগন আর মেলার চিরাচরিত আকর্ষণ নাগরদোলা। তাতেই মেতে উঠেছে ছোট বড় সবাই। রাইডগুলোর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ভয় আর উত্তেজনা মেশানো উল্লাস ধ্বনি শুনেই তা স্পষ্ট বোঝা যায়।

কচিকাঁচাদের মনপছন্দ রাইড, ছবি – অনন্যা সরকার

কেনাকাটা, রাইডে চড়ার পরে ক্লান্ত মন খাবারের সন্ধানে এদিক ওদিক খোঁজ করেই। মেলায় ঘুরতে আসার সঙ্গে এটা ওটা খাওয়ার একটা নিবিড় যোগ চিরদিনের। সুভাষ মেলা সেই ইচ্ছাকে নিরাশ তো করবেই না বরং স্টলে স্টলে ঘুরে লোভনীয় সব খাবার চাখতে উৎসাহ দেবে।

জিভে জল আনা ফুচকা থেকে ধোঁয়া ওঠা গরম ঘুগনি, মোমো থেকে ফিশফ্রাই, এমনকি পৌষ পার্বণে বাঙালির অতিপ্রিয় পিঠেপুলি, সব কিছুই রয়েছে এক চত্বরের মধ্যে। খালি পছন্দসই দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে পড়লেই হল।

ঘর সাজানোর সামগ্রি নিয়ে দোকানি, ছবি – অনন্যা সরকার

সুভাষ মেলার অন্য একটি আকর্ষণ হল সুভাষ ভবন নামের ছোট গ্যালারিটি। অস্থায়ী এই গ্যালারি মাঠের ঠিক মাঝে তৈরি করা হয়েছে। সামনে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আবক্ষ মূর্তি আর ভিতরে তাঁর জীবনের বিশেষ বিশেষ ঘটনাকে রূপ দিয়েছেন শিল্পীরা।

সুভাষ ভবনের পাশেই স্বামী বিবেকানন্দকে নিয়েও এরকমই একটি গ্যালারি রয়েছে। এই গ্যালারির সামনে থাকা রথে আরোহী স্বামীজি স্বয়ং। গ্যালারিগুলি সুন্দর করে সাজানো হলেও সেগুলিতে মানুষের বিশেষ আনাগোনা অবশ্য হচ্ছেনা।

সুবর্ণজয়ন্তী পার করা সুভাষ মেলা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এলাকাবাসীর মেলা ঘোরার আনন্দকে জিইয়ে রেখেছে। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বদলেছে মেলার অবয়ব। পাল্টেছে মেলার বিনোদন সামগ্রি থেকে মেলায় দেওয়া দোকানের রকমভেদ। ভিন্ন হয়েছে খাবারের স্টলগুলির ভাণ্ডারও। তবে অমলিন মেলা ঘোরার নির্ভেজাল আনন্দটা।

Ananya Sarkar

এমন পাত্র সবাই চাইবেন, বিয়ের মণ্ডপে যুবকের হাতজোড় করে বার্তা মন জয় করে নিল সকলের

বিয়েটা আর পাঁচটা বিয়ের মতই হল। তবে তার মাঝে পাত্র যা করলেন তা সকলের মন…

November 28, 2025

মহাকাশের অজানা রহস্য উন্মোচন করলেন ভারতের বিজ্ঞানীরা

রহস্যে ভরা মহাকাশের এক রহস্যের উন্মোচন করলেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। যা অবশ্যই দেশের জন্য গর্বের। উন্মোচিত…

November 28, 2025

২০ বছর আগে গঙ্গাসাগর মেলায় হারিয়ে যাওয়া মহিলার খোঁজ মিলল, তবে ভারতে নয়

২০ বছর আগের কথা। গঙ্গাসাগর মেলায় তিনি হাজির হয়েছিলেন পুণ্য অর্জনের আশায়। তারপর আর তাঁর…

November 28, 2025

ভারতের মুকুটে বিরল পালক, আমেরিকা, চিনের পরই এশিয়া শক্তি সূচকে ৩ নম্বরে উঠে এল ভারত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর চিনের পরই শক্তি সূচকে ভারতের নাম। ২০২৫ সালের তালিকায় এই স্থান অবশ্যই…

November 28, 2025

মেষ রাশির শনিবার দিনটা কেমন কাটবে ও শুভ সময়, ২৯ নভেম্বর, ২০২৫

মেষ রাশির আজকের দিনটা কেমন কাটতে চলেছে, রাশিফল ও দৈনিক সময়সূচী অনুযায়ী প্ল্যানিং করুন আজ…

November 28, 2025

বৃষ রাশির শনিবার দিনটা কেমন কাটবে ও শুভ সময়, ২৯ নভেম্বর, ২০২৫

বৃষ রাশির আজকের দিনটা কেমন কাটতে চলেছে, রাশিফল ও দৈনিক সময়সূচী অনুযায়ী প্ল্যানিং করুন আজ…

November 28, 2025