Kolkata

তৃণমূলে ফের ধাক্কা, চোখের জলে মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়

তৃণমূলে ধাক্কা অব্যাহত। শুভেন্দু অধিকারী ও লক্ষ্মীরতন শুক্লার পর এবার ইস্তফা দিলেন আর এক মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি ইস্তফা দেওয়ার পর কেঁদে ফেলেন।

Published by
News Desk

কলকাতা : তৃণমূলে ধাক্কা অব্যাহত। একের পর এক উইকেট পতন থামছে না। ইতিমধ্যেই পরিবহণ মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে পরে তৃণমূলের দলীয় সদস্যপদ ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।

শুভেন্দুর পর রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লাও মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। তবে তিনি কোনও দলে যাবেননা বলে জানিয়ে দিয়েছেন। রাজনীতিতে থেকে সরে গিয়ে তিনি ফের ক্রিকেটেই মনোনিবেশ করতে চান বলেও জানিয়ে দিয়েছেন লক্ষ্মী। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল আর একটা নাম। মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বেসুরো গাইছিলেন অনেকদিন ধরেই। তৃণমূলের তরফে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টাও হয় বারবার। দফায় দফায় তাঁর সঙ্গে বৈঠক হয় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের। কিন্তু ফল হয়নি।

মন্ত্রিসভার বৈঠকেও যোগ দিচ্ছিলেন না তিনি। অবশেষে শুক্রবার তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন। এই ইস্তফাপত্রের একটা কপি তিনি রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছেও দিয়ে আসেন।

মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও এখনও দল ছাড়ার কথা অবশ্য ঘোষণা করেননি তিনি। তবে রাজনৈতিক মহলের ধারণা তা হতে কতক্ষণ। শুভেন্দু অধিকারীর ক্ষেত্রেও এভাবেই ধাপে ধাপে দল ছাড়ার ঘটনা ঘটেছিল।

এদিন রাজভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় একসময় কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রথমে কিছুটা সামলে নিলেও পরে কাঁদতে কাঁদতেই সেখান থেকে সরে যান।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন তাঁর অনেকদিন ধরেই নানা বিষয়ে ক্ষোভ ছিল। আড়াই বছর আগে তাঁকে যখন সেচ মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে বনমন্ত্রী করা হয়েছিল তখন তাঁকে সেকথা জানানোর সৌজন্য দেখাননি মুখ্যমন্ত্রী। সেকথা তাঁকে টিভি-র ব্রেকিং নিউজ দেখে জানতে হয়েছিল দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করার সময়।

তিনি অবশ্যই এদিন বারবার বলেছেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবেন। তাঁর জীবনে মুখ্যমন্ত্রীর অবদান অনস্বীকার্য। আর তা তিনি চিরকাল মনে রাখবেন। কাজ কী করেছেন তা মানুষ বিচার করবেন।

তাঁর জন্য এভাবে মন্ত্রিত্ব ছাড়া যে হৃদয়বিদারক তা স্পষ্টই জানান রাজীব। তিনি এও জানান যেভাবে তাঁকে আঘাত করা হচ্ছিল তা তিনি মেনে নিতে পারেননি বলেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় হাওড়ার ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক। তিনি হাওড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেস-এর কো-অর্ডিনেটর। বনমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি ছিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মুখে এখনও কিছু না জানালেও রাজনৈতিক মহলের ধারণা তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। এমন জল্পনা কিন্তু ভেসে বেড়াচ্ছে।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ আগেই হয়েছিল। এদিন মন্ত্রিত্ব ত্যাগের মধ্যে দিয়ে তা আরও প্রকট হল।

সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে যেভাবে তৃণমূলে একের পর এক উইকেট পতন হচ্ছে তাতে তৃণমূল নেতৃত্বের চিন্তার কারণ রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।

তবে তা মানতে নারাজ তৃণমূল। এদিন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, তৃণমূল হল বটগাছের মত। কয়েকটা পাতা ঝরে গেলে গাছের কোনও ক্ষতি হয়না। আবার নতুন পাতা গজিয়ে যায়।

Share
Published by
News Desk
Tags: Kolkata News

Recent Posts