Kolkata

বাগবাজারের বস্তিতে বিধ্বংসী আগুন, পুড়ল মায়ের বাড়ির একাংশ

বাগবাজারের হাজারহাট বস্তিতে বিধ্বংসী আগুন লাগে বুধবার সন্ধেয়। স্তব্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। মায়ের বাড়ির কার্যালয়েও আগুন ছড়ায়। পুড়ে যায় একাংশ।

Published by
News Desk

কলকাতা : বাগবাজারের ওমেনস কলেজের লাগোয়া যে বিশাল বস্তিটি রয়েছে তা বুধবার সন্ধেয় সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেল। বিধ্বংসী আগুনের লেলিহান শিখা প্রথম দেখা যায় সন্ধে ৬টা নাগাদ। ঘিঞ্জি বস্তি জুড়ে প্রচুর দাহ্য বস্তু ভর্তি। ফলে আগুন লাগার পরই তা দ্রুত ছড়াতে থাকে।

বুধবার থেকে কলকাতায় প্রথম ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছে। এদিন আগুনকে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে কার্যত অনুঘটকের কাজ করে এই হাওয়ার দাপট। আগুন দেখার পরই বস্তির বাসিন্দারা প্রাণ বাঁচিয়ে বেরিয়ে আসেন বাইরের রাস্তার ওপর। শুরু হয় আগুন নেভানোর মরিয়া চেষ্টা। খবর যায় দমকলে।

বস্তিবাসীর অভিযোগ দমকলকে ফোন করা হলেও দমকল আসতে দেরি করে। ফলে তাঁদের ক্ষোভ চরমে ওঠে। পুলিশ এলে ক্ষোভ আছড়ে পড়ে পুলিশের ওপরও।

পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে আগুন নেভানোর কাজ নিশ্চিন্তে করতে নামানো হয় ব়্যাফ। আশপাশের বহুতল থেকে লোকজনকে সরিয়ে আনা হয়।

এদিকে আগুনের শিখা খুব দ্রুত পৌঁছে যায় মায়ের বাড়ির কার্যালয়ে। কার্যালয়ের কিছুটা অংশ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আগুন লাগার পর বস্তিবাসীরা বেরিয়ে আসেন। আর আগুনে তাঁদের ঘরের সবকিছু চোখের সামনে পুড়তে থাকে। দমকলের ২৫টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজে নামে।

দমকলকর্মীরা আগুনের ছড়ানো আটকে নেভানোর লড়াই চালান। কিন্তু এত দাহ্য বস্তু বস্তিতে ছিল যে আগুন নেভানো রীতিমত কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়ায়।

এর মধ্যে আতঙ্ক বাড়িয়ে একের পর এক বিস্ফোরণ হতে থাকে। বিকট আওয়াজ আর ভয়ংকর কম্পন ছড়িয়ে ফাটতে থাকে বস্তির বিভিন্ন অস্থায়ী ঘরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার। যার বিস্ফোরণ বড়সড় বোমা বিস্ফোরণের শামিল হয়।

আগুন রাত পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তবে দমকলকর্মীরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে এক দমকলকর্মী আহত হন। সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ হতে থাকায় দমকলকর্মীদের কাজে ঝুঁকি বেড়ে যায়।

টালা ব্রিজ ভেঙে দেওয়ার পর এখন উত্তরমুখী সব গাড়ি বাগবাজার লকগেট ব্রিজ দিয়ে সকালে আসছে আর দুপুর ১টার পর ফেরত যাচ্ছে। অফিস ফেরত উত্তরমুখী গাড়ির এখন কার্যত এক বড় ভরসা এই ব্রিজ।

ওই ব্রিজে ওঠার আগেই বাঁ দিকে পড়ে ওমেনস কলেজ ও এই হাজারহাট বস্তি। সেখানেই বিধ্বংসী আগুনের জেরে এদিন বন্ধ হয়ে যায় এখান দিয়ে যান চলাচল।

সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ-র গাড়ি গিরিশ পার্ক থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে এপিসি রোড ও বিধান সরণি ধরে আসা উত্তরমুখী গাড়ি বা বাসও রাজবল্লভ পাড়া হয়ে বাগবাজার হয়ে লকগেট ব্রিজ ধরে। সেসব গাড়িও এদিন বেলগাছিয়া দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে সন্ধেয় উত্তর কলকাতার ওই অঞ্চলে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।

Share
Published by
News Desk

Recent Posts