এই রহস্যময় মন্দিরে ঢুকলে মানুষ পাথর হয়ে যায়, এই বিশ্বাসের পিছনে রয়েছে করুণ কাহিনি
মন্দিরের নাম শুনলেই মানুষের মনে জেগে ওঠে ভক্তিভাব। কিন্তু এমন মন্দিরও আছে যা ভক্তির বদলে সৃষ্টি করে ভয়ের। মন্দিরকে ঘিরে থাকে রহস্যের এক আবরণ।

অনেক দিন আগের কথা। সে সময় এক সাধু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে এই মন্দিরে এসে হাজির হন। মন্দিরে শিষ্যদের অপেক্ষা করতে বলে তিনি অন্যত্র পাড়ি দেন। এদিকে গুরুদেব সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর শিষ্যদের মধ্যে একজন অসুস্থ হয়ে পড়েন।
আতান্তরে পড়ে অন্য শিষ্যরা স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছে সাহায্য চান। কিন্তু গ্রামের কেউই সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। এদিকে ওই শিষ্যের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
একসময় সেই সাধু ফিরে আসেন। তিনি এসে দেখেন তাঁর এক শিষ্য গুরুতর অসুস্থ। এটাও জানতে পারেন যে গ্রামের মানুষের কাছে তাঁর অন্য শিষ্যরা সাহায্য চাইলেও কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি।
এটা শুনে ওই সাধু প্রচণ্ড রেগে যান। তিনি অভিশাপ দেন যে সন্ধে নামলে গ্রামের মানুষ পাথর হয়ে যাবেন। এই অভিশাপের পর ওই সাধু জানতে পারেন কেউ সাহায্য না করলেও গ্রামের এক মহিলা ওই অসুস্থ শিষ্যের সেবাযত্ন করেছিলেন।
একথা জানার পর সাধু ওই মহিলাকে বলেন তিনি যেন সন্ধে নামার আগেই গ্রাম থেকে চলে যান। যাওয়ার সময় ভুলেও পিছন ফিরে তাকাতে ওই মহিলাকে মানা করে দেন সাধু।
ওই মহিলা সাধুর নির্দেশ মেনে সন্ধের মুখেই গ্রাম ছেড়ে চলে যান। গ্রাম ছেড়ে একটু এগিয়ে কিন্তু তাঁর কৌতূহল তিনি দমাতে পারেননি। পিছন ফিরে তাকিয়ে ফেলেন। আর তখনই তিনি গ্রামের বাকিদের মতই পাথর হয়ে যান।
এ গ্রামের বাইরে তাই এখনও ওই মহিলার একটি মূর্তি দেখতে পাওয়া যায়। এখনও স্থানীয় মানুষ এই মন্দিরে সন্ধে নামলে প্রবেশ করেননা পাথর হয়ে যাওয়ার ভয়ে।

মরুরাজ্য রাজস্থানে অবস্থিত এক প্রত্যন্ত গ্রামের নাম সিহনি। এই সিহনিতেই রয়েছে সেই ভয়ঙ্কর রহস্যময় মন্দির কিরাডু। গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করেন এই কিরাডু মন্দিরে প্রবেশ করলেই পাথরে পরিণত হয়ে যেতে হবে।
তাই আজও ওই মন্দিরে স্থানীয় কেউ সাহস করে ঢোকেন না। তবে মন্দিরটি খুবই সুন্দর এক শিল্পকীর্তিতে তৈরি। মন্দিরের স্থাপত্যে দক্ষিণী শিল্পের ছাপ স্পষ্ট। প্রাচীন কাহিনি ও শিল্প মিলে এই মন্দির পর্যটকদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়।