SciTech

মহাকাশে আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র আসলে কি, কীভাবে তৈরি হল, জেনে নিন খুঁটিনাটি

সুনিতা উইলিয়ামস থেকে বহু মহাকাশচারী যেখানে মাসের পর মাস কাটিয়েছেন সেই আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের নাম তো অনেকেই শুনেছেন। এবার তার খুঁটিনাটি কথা জেনে রাখতে পারেন।

মহাকাশে গিয়ে ফেরা নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামসের। সেকথা সংবাদমাধ্যমে অনেকেই পড়েছিলেন। অনেকে উদগ্রীবও ছিলেন কবে ফিরতে পারেন সুনিতা সেটা জানার জন্য।

সুনিতা ফিরেছেন। ফিরেছেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে। যেখানে সাধারণত মহাকাশচারীরা হাজির হন দীর্ঘদিনের জন্য থাকতে। সেখানে গবেষণার কাজ করতে। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের নাম অনেকের জানা। কিন্তু কি এই আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র। সেটা পরিস্কার থাকা জরুরি।


ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন বা আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র হল মহাকাশে পাক খাওয়া অন্য কৃত্রিম উপগ্রহের মতই। যেটি পৃথিবীর মাটি থেকে ৪০০ কিলোমিটার উচ্চতায় মহাকাশে অবস্থান করছে।

পৃথিবীকে অন্য কৃত্রিম উপগ্রহের মতই পাক খাচ্ছে সে। গতিও প্রবল। ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৫০০ মাইল গতিতে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে সে। প্রতি ৯০ মিনিটে একবার পৃথিবীকে পাক খায় আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন।


আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন কিন্তু একাধিক দেশের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তৈরি হয়েছিল। অন্য কৃত্রিম উপগ্রহের চেয়ে এটি আলাদা। কারণ এখানে মানুষ থাকতে পারে। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস।

১৯৯৮ সালে এটি তৈরি শুরু হয়। একটি দেশ তৈরি করেনি এটিকে। একবারই রকেটে করে মহাকাশে পৌঁছে যায়নি এই আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন। অনেক টুকরো বিভিন্ন সময়ে গিয়ে পৌঁছেছে মহাকাশে। তারপর মহাকাশচারীরা সেগুলিকে জুড়ে জুড়ে এই আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন তৈরি করেন।

শুরুটা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। রাশিয়া জারিয়া কন্ট্রোল মডিউল পাঠায়। এর ২ সপ্তাহ পরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নোড পাঠায়। যা জারিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়। সামনের ২ বছরে এমন অনেক টুকরো মহাকাশে পৌঁছেছে।

তারপর সেগুলি জোড়া লাগিয়ে ২০০০ সালের ২ নভেম্বর প্রথম আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে কোনও মহাকাশচারী থাকার জন্য হাজির হন। সেই শুরু। তারপর আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন তৈরির কাজ যেমন চলতে থাকে, তেমন বিভিন্ন দেশের মহাকাশচারীরা সেখানে থেকে গবেষণাও চালাতে থাকেন। ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন সম্পূর্ণ রূপ নেয়।

এখন এখানে একটি গবেষণাগার তো রয়েছেই, তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে মহাকাশচারীদের থাকার সুবিধার জন্য রয়েছে ৬টি শোওয়ার জায়গা, ২টি বাথরুম, ১টি জিম। এছাড়া আছে গোল করে জানালা। যা দিয়ে বাইরেটা ৩৬০ ডিগ্রিতে দেখা যায়।

সূর্যরশ্মির শক্তি থেকে এই আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের কাজ চলে। বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। এখানে মানুষের দীর্ঘদিন থাকা শুধু গবেষণার জন্যই নয়, এখানে মানুষকে রেখে আগামী দিনে আরও গভীর মহাকাশে মানুষ পাঠানোর পরিস্থিতি নিশ্চিত করছে নাসা সহ বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *