স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ালে রেলযাত্রীদের জন্য শিল্পের হাতছানি, স্টেশনেই হচ্ছে ইচ্ছাপূরণ
ট্রেনে যাঁরা যাত্রা করছেন তাঁদের অনেকেই শৌখিন হন। শিল্পানুরাগী হন। তাঁদের জন্য এক বিশেষ সুবিধাকে ক্রমশ স্টেশনে স্টেশনে ছড়িয়ে দিচ্ছে রেল।

ভারতের যে প্রান্তেই যাওয়া যাক সেখানকার নিজস্ব শিল্প সংস্কৃতি নজর কাড়ে। এমনকি একটি রাজ্যের মধ্যেও প্রান্ত ভেদে বদলে যায় শিল্পরীতি, হস্তশিল্প। যিনি যেখানে থাকেন সেখানে সহজে পাওয়া যাওয়া শিল্প সামগ্রি তাঁরা পেয়ে যান।
অনেকসময় মেলা বা কোনও বিশেষ দোকানে অন্য জায়গার জিনিসও পাওয়া যায়। কিন্তু চাইলেই যে কোনও বিশেষ জায়গার বিশেষ জিনিসটি হাতে পেয়ে যাবেন, তেমন সুযোগ বড় একটা নেই। এবার রেলযাত্রীরা সেই সুযোগ পাবেন। রেল সেই সুযোগ করে দিচ্ছে।
কোথাও ট্রেনে সফর করার সময় ট্রেনটি বিভিন্ন স্টেশনের ওপর দিয়ে যাত্রা করে। যাত্রাপথে বদলে যায় রাজ্য, বদলে যায় শহর, গ্রাম। প্রতিটি জায়গায় যেখানে ট্রেন দাঁড়ায় তার অনেক জায়গারই নিজস্ব হস্তশিল্প রয়েছে। সেখানকার শিল্পীরা নানা জিনিস হাতে তৈরি করেন। সেটা তাঁদের নিজস্ব শিল্প রীতি।
কিন্তু তাঁরা বাজার পান না। আর সেসব শিল্প যাঁদের পছন্দ হত, তাঁরা সেগুলি দেখারই সুযোগ পান না। এই যে শিল্পী ও ক্রেতার মধ্যে সংযোগের অভাব, সেটাই এবার পূরণ করছে রেল।
রথ দেখা কলা বেচার মতই, নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলের বিভিন্ন স্টেশনে চালু হয়েছে ওয়ান স্টেশন, ওয়ান প্রোডাক্ট স্টল। যেখানে সেই জায়গার স্থানীয় শিল্পীদের শিল্পকর্ম সাজানো থাকছে। যা তাঁদের সংস্কৃতিকেও তুলে ধরে।
অন্যদিকে যাত্রীরা সকলেই সেই স্টেশনে ট্রেন থামলে বা সেই স্টেশনে নামা ওঠা করলে ওই শিল্প সামগ্রির স্টল সামনেই দেখতে পাচ্ছেন। স্থানীয়দের হাতের কাজ চোখে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। পছন্দ হলে কিনেও নিচ্ছেন। এতে স্থানীয় শিল্পীরা লাভবান হচ্ছেন।
একাধারে তাঁদের শিল্প যেমন শিল্পের কদর করা মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, তেমনই তাঁদের অর্থ উপার্জনও হচ্ছে। সহজেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে তাঁদের শিল্প পৌঁছে যেতে পারছে স্টেশনের স্টলের হাত ধরে।
এই উদ্যোগ ক্রমশ বিভিন্ন স্টেশনে ছড়িয়ে দিচ্ছে রেল। প্রধানমন্ত্রীর ভোকাল ফর লোকাল স্লোগানও এর ফলে গতি পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের ২৬টি, অসমের ৭১টি, বিহারের ৮টি, ত্রিপুরার ৪টি, অরুণাচল প্রদেশের ২টি এবং নাগাল্যান্ডের ১টি স্টেশনে স্থানীয় শিল্পীদের শিল্পকর্ম সাজিয়ে ওয়ান স্টেশন, ওয়ান প্রোডাক্ট স্টল রমরমিয়ে চলছে। আরও বিভিন্ন স্টেশনে এই স্টল ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা