Sports

অসামান্য মুশফিকুর, ৪ বলে শেষ ভারতের সব আশা, ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশ

Published by
News Desk

অসামান্য খেলে ভারতকে প্রথম টি-২০ ম্যাচে হারিয়ে দিল বাংলাদেশ। শুধু হারাল না। ইতিহাসও গড়ল। এই প্রথম বাংলাদেশ টি-২০ আন্তর্জাতিকে ভারতকে হারাতে সক্ষম হল। সেদিক থেকে ইতিহাসের পাতায় নাম তুলল তারা। টস জেতা থেকে শুরু করে ব্যাটিং, বোলিং সব ক্ষেত্রেই এদিন ভারতের চেয়ে অনেক বেশি সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে বাংলাদেশ। ভারত ১৪৮ রান করে থাকতে পারে। কিন্তু তাও হতনা যদিনা শেষ ১০ বলে ৩টি ছক্কা ও ১টি ৪ না আসত।

১৪৯ রান তাড়া করতে নেম বাংলাদেশের লিটন দাস বাদ দিয়ে সকলেই মেপে খেলে বাংলাদেশকে ধাপে ধাপে জয়ের দিকে এগিয়ে দিয়েছেন। আর শেষে ওস্তাদের মারের মত খলিলের চার বলে ৪টি চার মেরে খেলার সব উত্তেজনায় জল ঢেলে দেন বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ মুশফিকুর রহিম। খেলার ৩ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটে জেতে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম এদিন ৪ বলে ৪টি চার ১৯ তম ওভারে না হাঁকালে কিন্তু এই ম্যাচ কে জিতত বলা শক্ত। ৬০ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ম্যাচের সেরাও হন মুশফিকুর।

দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে এদিন টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। শুরুতেই ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মার উইকেট তুলে বড়সড় ধাক্কা দেয় তারা। ফলে শুরুতে রানের গতি কিছুটা মার খায়। পিচে বোলাররা যত সুবিধা পাচ্ছিলেন ব্যাটসম্যানেরা তা পাচ্ছিলেন না। ধীরে রান উঠতে থাকে। রোহিত ৯ রানে ফেরার পর কেএল রাহুল ১৫ রান করে ফেরেন। গুরু দায়িত্ব গিয়ে পড়ে শিখর ধাওয়ানের কাঁধে। ফলে শিখর কিছুটা হলেও ধরে খেলতে থাকেন। রান উঠতে থাকে। কিন্তু খুব ধীরে। অন্তত টি-২০ প্রতিযোগিতায় যে গতিতে রান তোলার দরকার পড়ে তা দেখা যাচ্ছিল না।

শ্রেয়স আইয়ার বেশ দায়িত্বপূর্ণ একটা ২২ রানের ইনিংস খেলেন। শিখর ফেরেন ৪১ রান করে। অনেক আশা থাকলেও শিবম দুবে মাত্র ১ রান করে আউট হয়ে যান। ১৮.২ ওভারের শেষে গিয়ে ভারতের সংগ্রহ ছিল ১২০ রান। আউট হয়ে ফেরেন ঋষভ পন্থ (২৭)। এই পরিস্থিতিতে ভারত অল্প রানেই শেষ করবে ২০ ওভার বলে সকলে ধরেই নিয়েছিলেন। ১০ বলে আর কত রান তোলা সম্ভব! কিন্তু সেই ১০ বলে ২৮ রান তুলে নেয় ভারত। ক্রুণাল পাণ্ডিয়া ও ওয়াশিংটন সুন্দর দুরন্ত ব্যাট করেন স্লগ ওভারে। ওয়াশিংটন ২টি ছক্কা হাঁকান। ক্রুণাল মারেন ১টি ছক্কা, ১টি চার। সব মিলিয়ে শেষ ২ ওভারে খেলার ভোল বদলে ভারত ২০ ওভারের শেষে তোলে ১৪৮ রান। এদিন বাংলাদেশ ৮ জন বোলারকে দিয়ে ২০ ওভারের ম্যাচে বল করায়।

১৪৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে রোহিতের মত বাংলাদেশও শুরুতেই উইকেট হারায়। ৭ রান করে ফেরেন লিটন দাস। মহম্মদ নইম ও সৌম্য সরকার খেলার হাল ধরেন। মহম্মদ নইম ফেরেন ২৬ রান করে। সৌম্য সরকার ফেরেন ৩৯ রান করে। এরপর মুশফিকুর রহিম এবং অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ খেলার হাল ধরেন। খেলা গড়ায় টানটান উত্তেজনায়। কিন্তু সব উত্তেজনায় জল ঢেলে দেন একা খলিল আহমেদ। ১৯ তম ওভারে ম্যাচ যখন টানটান উত্তেজনায় রয়েছে তখন পরপর ৪ বলে ৪টে চার খান খলিল। মুশফিকুর একটানা পরপর ৪টি চার হাঁকিয়ে ম্যাচ বার করে নেন। শেষ ওভারে শিবম দুবে আবার একটি ওয়াইড করে আরও সহজ করে দেন বাংলাদেশের জয়। আর শেষ বলে নায়কোচিত ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ।

একটা অসামান্য জয় বললেও কম বলা হয়। দিল্লির দূষণযুক্ত আবহাওয়ায় বাংলাদেশ এদিন ব্যাটিং, বোলিং সব ক্ষেত্রেই ভারতকে টেক্কা দিয়েছে। অতি আত্মবিশ্বাস হয়তো ভারতের হারের এক অন্যতম কারণ। তবে বাংলাদেশ দেখিয়ে দিয়েছে তারা যে কোনও মুহুর্তে বিশ্বের যে কোনও দলকে হারানোর ক্ষমতা ধরে।

Share
Published by
News Desk

Recent Posts