হাতুড়ি, ছবি - সৌজন্যে - উইকিমিডিয়া কমনস
ধুমধামে এতটুকু খামতি নেই। বরযাত্রীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। সকলেই সুন্দর পোশাকে সজ্জিত। আনন্দেও খামতি নেই। বলিউডের গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচতে নাচতে বরযাত্রীরা এগোতে থাকেন।
বরও এসেছে। তবে সে বর রক্তমাংসের মানুষ নয়! সেকি কথা! বর মানুষ নয়! অবাক হওয়ার মত হলেও এটাই সত্যিই। একটি হাতুড়িকে সিল্ক আর ব্রোকেটের পোশাক পরিয়ে বর সাজিয়ে নিয়ে আসেন বরযাত্রীরা। মনে হতেই পারে তাহলে কনের কি হবে? তাহলে বলতে হয় চমক আরও বাকি আছে। কারণ এ বিয়েতে কনেই নেই!
উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের চক এলাকায় প্রতিবছর হোলির সময় এভাবেই হাতুড়ির বিয়েতে মেতে ওঠেন সকলে। প্রতিবছরই এই ‘হাতোড়া বারাত’ বার হয় রাজপথে।
কিন্নর আখারা-র মহামণ্ডলেশ্বর কৌশল্যা নন্দ গিরি আরতি করে এই শোভাযাত্রার সূচনা করেন কেশর বিদ্যাপীঠ থেকে। এখানকার ‘প্রয়াগ নাগরিক সেবা সংস্থান’ সংগঠনের তরফে পুরো আয়োজন করা হয়। এঁদের অফিসেই সারা বছর সুসজ্জিতভাবে রাখা থাকে এই হাতুড়ি।
এখান থেকে হোলির সময় প্রথমে হাতুড়িটিকে গঙ্গায় নিয়ে গিয়ে স্নান করানো হয়। তারপর হাতুড়িকে সাজানো হয় সিল্ক ও ব্রোকেট পোশাকে। পরানো হয় মালা। একদম বরবেশে সজ্জিত হয়ে ওঠে হাতুড়িটি।
এই পুরো অনুষ্ঠানের পিছনে রয়েছে অশুভের পরাজয়ের কাহিনি। এই হাতুড়ি দিয়ে সব শেষে একটি লাউ ফাটানো হয়। এই লাউটিকে অশুভ ধরে শুভ হাতুড়ি দিয়ে তার বিনাশ হয়।
পুরো প্রথা সম্পূর্ণ না হলে এখানে কেউ রং খেলা শুরুই করেননা। তবে কবে থেকে এবং কেন এই হাতোড়া বারাত প্রথা শুরু হল তা কারও জানা নেই। প্রতিবছর পালিত হয়। তাই প্রথা মেনে প্রতিবছরই এই শোভাযাত্রা বার হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা