World

১২ বছর পর সদ্যোজাতের কান্না, বিস্ময়ে হতবাক গোটা দ্বীপপুঞ্জ

Published by
News Desk

গত ১২ বছর সদ্যোজাতের কান্নার শব্দ শোনেননি কেউ। হঠাৎ কোথা থেকে কি যে হয়ে গেল! অনেকটা দৈব আশীর্বাদেই যেন নবজাতিকার কান্নায় প্রাণ ফিরে পেলেন বাসিন্দারা। ফার্নান্দো দে নোরোনা দ্বীপপুঞ্জের কোল আলো করে জন্ম নিল এক ফুটফুটে কন্যাসন্তান। তাকে নিয়ে এখন খুশির উৎসবে মেতে উঠেছে সবুজ অরণ্যে ঘেরা ব্রাজিলের নিকটবর্তী এই দ্বীপপুঞ্জটি। মাত্র ৩ হাজার মানুষের বাস এখানে। ১২ বছর আগেও সেখানে সন্তান প্রসব করার অধিকার ছিল মায়েদের। হঠাৎ সব কিছু তালগোল পাকিয়ে দেয় স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশিকা। সন্তান প্রসবের নির্ধারিত সময়ের আগে যেতে হবে অন্য দ্বীপে। দাঁতে দাঁত চেপে প্রসব বেদনা সহ্য করে এ সময়ে পাড়ি দিতে হবে অন্যত্র। কিন্তু এই দ্বীপপুঞ্জে সন্তান প্রসব চলবে না।

সরকারের এমন কঠিন নির্দেশিকা  জারির কারণ ছিল গুরুতর। আসলে ফার্নান্দো দে নোরোনা দ্বীপপুঞ্জে কোনও হাসপাতালেই ছিল না প্রসূতি বিভাগ। তাই বাধ্য হয়েই ফার্নান্দো দে নোরোনার প্রশাসন দ্বীপপুঞ্জে সন্তান ভূমিষ্ঠের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আচমকা প্রসব যন্ত্রণা উঠলে হবু মায়েদের মহাসাগরের বুকে ভেসে ৩৬৫ কিমি পথ পেরিয়ে পৌঁছতে হত মূল ভূখণ্ডের শহর নাটালে। সেখানকার হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দিতে বাধ্য হতেন গর্ভবতী রমণীরা। মাতৃত্বের স্বাদ পেতে এইভাবে দিনের পর দিন ঝুঁকি নিয়ে নাটালে পাড়ি জমাতেন সন্তানসম্ভবা মায়েরা। কখনও কখনও পথেই সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তেন তাঁরা। কখনও বা প্রসব করতেন মৃত সন্তান।

গত শুক্রবারের ঘটনা। পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হওয়ায় শৌচাগারে যান দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দা এক যুবতী। টয়লেট করতে গিয়ে যোনিপথ দিয়ে আচমকাই বেরিয়ে আসে তাঁর গর্ভস্থ সন্তান। অগত্যা কন্যাসন্তানের নরম শরীরটা ২ হাত দিয়ে টেনে বার করেন তিনি নিজেই। বছর ২২-এর যুবতীর দাবি, তিনি যে প্রসবের পরিস্থিতির মুখে এসে দাঁড়িয়েছেন তা তিনি নিজেও টের পাননি! যদিও তাঁর কথার সত্যতা নিয়ে সন্দিহান যুবতীর প্রতিবেশিরাই। তবু যুবতীর বয়ান যাচাইয়ের ঝঞ্ঝাটে না গিয়ে ১২ বছরের শাপমোচনের কাণ্ডারী ও ফুটফুটে সদ্যোজাতকে নিয়ে আনন্দে আত্মহারা গোটা দ্বীপপুঞ্জ।

Share
Published by
News Desk