নরকের দরজা, ছবি - সৌজন্যে - উইকিমিডিয়া কমনস
একসময় দিগন্ত বিস্তৃত এক শুকনো প্রান্তর পড়ে থাকত অবহেলায়। সেখানেই একদিন এক অংশে বিশাল গোলাকার মুখ তৈরি হল। সেই মুখের মধ্যেটা জ্বলতে শুরু করল। ভয়ংকর সে আগুন। ক্রমে সেই আগুনের নাম হয়ে গেল নরকের দরজা। যা একসময় অচিরেই পর্যটকদের আকর্ষণে পরিণত হল।
দেশ বিদেশ থেকে বহু মানুষ এখানে ভিড় জমাতে থাকলেন এই রাতদিন জ্বলতে থাকা আগুন দেখতে। সাধারণত এমন ঘটনা প্রকৃতির বিস্ময় হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে এই আগুন মানুষের সৃষ্টি ছিল।
গেটওয়ে টু হেল ১৯৭১ সালে তৈরি হয়। সে সময় তুর্কমেনিস্তান ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ। রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা সেখানে হাজির হন একটি মাটির তলার মিথেন গ্যাসের নিষ্ক্রমণ খুঁজতে। তাঁরা সেখানে মাটি কেটে অনেকটা গভীর করেন।
তারপর সেখানে প্রচুর মিথেন গ্যাসের খোঁজ পেয়ে স্থির করেন সেটি নষ্ট করতে তাতে আগুন ধরানোই সঠিক হবে। রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা সেখানে আগুন লাগিয়ে দেন। স্থির করেছিলেন মিথেন পুড়ে এভাবে শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু হয় ঠিক উল্টোটা।
সেই বিশাল গ্যাস যে পরিমাণে কতটা সে সম্বন্ধে তাঁদের ধারনা ছিলনা। ফলে মিথেন গ্যাস জ্বলতেই থাকে। প্রান্তরের মাঝে এক অগ্নিকুণ্ডের জন্ম হয়। যা স্থানীয় পরিবেশকেও দূষিত করতে থাকে মিথেন গ্যাসের ধোঁয়ায়।
১৯৭১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত টানা জ্বলে চলেছে এই আগুন। ফেলে রাখলে আরও কতদিন জ্বলবে জানা নেই। তাই তুর্কমেনিস্তান সরকার এবার এই আগুন নেভাতে চাইছে। আশপাশের পরিবেশকে রক্ষা করতে চাইছে।
যদিও এই আগুন পর্যটক আকর্ষণ হওয়ায় তা থেকে আসা অর্থ আগুন নিভলে আর পাওয়া যাবেনা। তবে সেসব না ভেবে এখন তুর্কমেনিস্তান সরকার এই আগুন নেভাতে তৎপর। তাদের দাবি কিছুটা আগুন প্রশমিতও হয়েছে। এখন দেখার মানুষের লাগানো এই অগ্নিকুণ্ডের আগুন ঠিক কতদিনে থামে।