World

বাবা মায়ের না চাওয়া শিক্ষার কাঁধে ভর করেই তাঁদের ঋণ শোধ করলেন ছেলে

বাবা মায়ের ঋণ শোধ করলেন ছেলে। সেটাও বাবা মায়ের প্রবল অনিচ্ছার শিক্ষার কাঁধে ভর করে। দিনরাত এক করে তাঁর সেই লড়াই জায়গা পেল শিরোনামে।

তাঁর যখন ৫ বছর বয়স তখন থেকেই তাঁর একটা ঝোঁক পরিস্কার হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাবা মা চাননি ছেলে এই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করুন। কারণ এসব শিখে জীবনে নিজের পায়ে দাঁড়ানো সহজ নয়। কিন্তু ছেলের ছিল অদম্য ইচ্ছা।

তাই না চাইলেও ছেলের ইচ্ছার সামনে অনিচ্ছা সত্ত্বেও নরম হতে হয় বাবা মাকে। ছেলেটি তাঁর দক্ষতা বাড়াতে থাকেন। তারপর তাঁর সেই পছন্দের বিষয় ক্যালিগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা শেষ করেন।


চিনের প্রাচীন একটি শিল্প হল এই চৈনিক ভাষাকে সুন্দর করে লেখার দক্ষতা। চিনা ক্যালিগ্রাফিতে ডিগ্রি নিয়ে ছেলেটি তখন রীতিমত পটু। তিনি চিনা ক্যালিগ্রাফি নিয়ে ফাইন আর্টস ইন্সটিটিউট থেকে পাশ করার পর ফ্রান্সে চলে যান।

কিন্তু দ্রুত নিজের দেশ চিনে ফেরেন। কারণ ততদিনে তাঁদের পারিবারিক পোশাকের ব্যবসায় তালা পড়েছে। বাবা মায়ের মাথার ওপর পাহাড় প্রমাণ ঋণ। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২৩ কোটি টাকা!


চেন ঝাও নামে ওই যুবক শুরু করেন ক্যালিগ্রাফি প্রশিক্ষণ। সব ছেড়ে কেবল ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণে মন দেন তিনি। তা থেকে আসা অর্থ জমাতে শুরু করেন ঋণ শোধ করার জন্য। খুব দ্রুত তাঁর সেই ক্যালিগ্রাফি শিক্ষার স্টুডিও জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। রোজগারও বাড়ে।

এভাবে ৭ বছর ধরে রাতদিন এক করে পরিশ্রম শেষে অবশেষে সেই ছেলে বাবা মায়ের সব ঋণ শোধ করতে সমর্থ হয়েছেন। তাঁর এই কাহিনি চিনে এখন রীতিমত মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে। তিনি এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সংবাদমাধ্যমে খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে বহু সংবাদমাধ্যমে এই খবরটি জায়গা করে নেয়। ফলে এখন চেন-এর বাবা মায়ের ঋণ শোধের কাহিনি অনেকের জানা হয়ে গেছে।

বাবা মা যে শিক্ষা কখনও চাননি, নিজের ভালবাসার টানে সেই ক্যালিগ্রাফি শিক্ষাই বাবা মায়ের ঋণ শোধ করতে সাহায্য করল। এটা ফের একবার প্রমাণ করল জোর করে কারও ইচ্ছাকে পূরণ করতে নয়, হৃদয় থেকে ভালোলাগার বিষয় নিয়ে পড়াশোনাই কেবল মানুষকে একটা জায়গায় পৌঁছ দিতে পারে।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button