World

‘তুষার কিশোর’-কে নিয়ে হইচই সোশ্যাল মিডিয়ায়, সাহায্যে এগিয়ে এল সরকার

Published by
News Desk

মাথার কালো চুল কুচি কুচি সাদা তুষারে ঢাকা। কচি দুটো গাল শীতের কামড়ে লালচে স্ফীত। নরম ছোট্ট হাত দুটো ‘ফ্রস্ট বাইট’-এর শিকার। ওই হাতেই কলম ধরে লিখতে হবে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের উত্তর। বাইরের তাপমাত্রা ছুঁয়েছে মাইনাস ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ পরনে নামমাত্র শীত পোশাক। যার কথা বলা হচ্ছে সে হল ৮ বছরের বালক ওয়াং ফুমান। চিনের ইউনান প্রদেশের বাসিন্দা।

শীতের মরসুমে ইউনানসহ চিনের পূর্বাংশের অধিকাংশ অঞ্চল ঢেকেছে দুধ সাদা বরফে। কনকনে ঠান্ডায় বাইরে বার হলেই জমে যাওয়ার মতো অবস্থা। তবু শীতের কারণে তো আর পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়া চলে না। তার উপরে চলছে পরীক্ষা। তাই বেশ কয়েক মাইল পথ পার হয়ে স্কুলে যেতে বাধ্য হয় ওয়াং ফুমানের মত আরও অনেককে। তুষারপাত মাথার নিয়ে পৌঁছাতে হয় স্কুলে। কারণ, মাথা বাঁচানোর টুপি কেনার টাকা নেই। ছোট্ট হাত দুটো ঠান্ডার কামড়ে ফুলে লাল। অথচ হাতে নেই কোন গ্লাভস।

আসলে ইউনান প্রদেশের বহু পরিবারের শীত পোশাক কেনার মতও আর্থিক সামর্থ্য নেই। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওয়াংয়ের মতো অনেক পড়ুয়াকেই বরফ মাথায় নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। মাথা ভর্তি বরফ নিয়ে প্রাথমিক স্কুলে পৌঁছানো ওয়াংয়ের ছবি সম্প্রতি ‘ভাইরাল’ হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

প্রথমে ওয়াংয়ের চুলের জন্য নেটিজেনরা তার নাম দেয় ‘তুষার কিশোর’। তারপরেই সামনে আসে ওয়াংয়ের ‘তুষার কিশোর’ হয়ে ওঠার পিছনের নির্মম জীবনযন্ত্রণার কাহিনি। ইউনান অঞ্চলের পড়ুয়াদের জীবন বিপন্ন করে লেখাপড়া করার মর্মান্তিক ঘটনা নাড়িয়ে দেয় সাধারণ মানুষকে। সাথে সাথে চিনের নানা প্রান্ত থেকে আসতে থাকে অর্থ সাহায্য। ওয়াং ও তার স্কুলের পাশে দাঁড়ায় চিনের সরকারও। প্রায় ২ কোটি টাকার অর্থসাহায্য তুলে দেওয়া হয় ওয়াংয়ের স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে। ওয়াং ও তার বন্ধুদের স্কুলের শ্রেণিকক্ষগুলি গরম রাখা, প্রত্যেক বাচ্চার হাতে পর্যাপ্ত শীতপোশাক তুলে দেওয়ার লক্ষ্য সামনে রেখেই এই অর্থ সাহায্য। নতুন পোশাক আর অনেক উপহার পেয়ে এখন বেজায় খুশি ওয়াং ও তার বন্ধুরা।

Share
Published by
News Desk