মাছের পাখনাই হয়ে গেছে মানুষের হাত, এমনই দাবি করলেন গবেষকেরা
মানুষের হাতই তাকে অন্য প্রাণিদের থেকে আলাদা করে দিয়েছে। কিন্তু নতুন জিনের কারণে হাত সৃষ্টি হয়নি। তাহলে কিভাবে তৈরি হল এরকম আলাদা একটা অঙ্গ।

মস্তিষ্কের কারণে মানুষ প্রাণিকুলের সবচেয়ে উপরে স্থান পেয়েছে। আর সেই মস্তিষ্কের বিকাশেও হাতের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু মানুষের যে হাত তাকে একেবারে আলাদা অস্তিত্ব দিয়েছে তার উৎপত্তি হয়েছে বিবর্তনের মাধ্যমে। অন্তত একদল গবেষক সেটাই দাবি করছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে ৩৬ কোটি বছর আগে মাছ ডাঙায় উঠতে শিখেছিল। তখন পাখনা থেকে পা গজানো শুরু হয়। এরপর সেই পায়ে আঙ্গুলও তৈরি হয়। এর সত্যতা প্রমাণ করতে বিজ্ঞানীরা বহু বছর ধরেই বিভিন্ন জীবাশ্ম, মাছ ও স্থলচর প্রাণির ভ্রূণের গঠন পরীক্ষা করে চলেছেন।
আমেরিকার একটি ইন্সটিটিউটের গবেষকেরা বিশেষ পরীক্ষা করেন। ডিএনএ কাটা ছেঁড়ার এই পরীক্ষায় তাঁরা দেখেন শরীরে অনন্তকাল ধরে যেসব জিন উপস্থিত ছিল সেগুলিরই কিছু অংশ বদলে গিয়ে অঙ্গের বিবর্তন হয়েছে।
গবেষকেরা জানান ভ্রূণের মধ্যে সবরকমের জিন থাকে। নতুন কোষ তৈরি হলে তারাও উত্তরাধিকার সূত্রে ওই পুরনো জিনই পায়। সেই জিনের সক্রিয়তার কারণেই শরীরে নানা অঙ্গ তৈরি হতে পারে। এভাবেই গবেষকরা দেখিয়েছেন মানুষের হাতও মাছের পাখনা থেকেই এসেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে জেব্রাফিশ এবং স্তন্যপায়ী প্রাণিদের শরীরে একই জিনসেট আছে। কারণ উভয়ের পূর্বপুরুষ এক। ৪০ কোটি বছর আগে এই মাছের অস্তিত্ব ছিল। তাই পাখনা থেকে হাত তৈরির এই তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে বিজ্ঞানীরা জেব্রাফিশের ভ্রূণ নিয়ে পরীক্ষা করেন।
সেই পরীক্ষায় প্রমাণিত হয় এই মাছটি যখন থেকে ডাঙায় ওঠে তখন থেকেই তার পাখনা হাত পায়ে বদলে যায়। মানুষ এবং জেব্রাফিশের পূর্বপুরুষ এক হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবে তাদের জিনও এক হবে। ফলে পুরনো জিনই ভোল পাল্টে মানুষের হাত, পা বানিয়েছে। এমনই দাবি করেছেন গবেষকেরা।