পাতিলেবুতে বিশ্বজয়, লেবুগাছ কেটে ফেলার পরিকল্পনা থেকে সরে এলেন কৃষকরা
পাতিলেবু স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারি। সরবতেও তার জুড়ি নেই। আবার তা ভারতের মাটিতে যথেষ্ট সহজলভ্য। সেই পাতিলেবু গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েও শেষে সরে এলেন কৃষকরা।

প্রায় খাদের কিনারায় পৌঁছে যাওয়া কাউকে যদি বাঁচিয়ে দেওয়া যায়, তাঁকে নতুন সুন্দর একটা জীবনের আলো দেখানো যায়, তাহলে তিনি নতুন করে বাঁচার অক্সিজেন পান। অবসাদে ভরে ওঠা মনটা মুহুর্তে কেমন চাঙ্গা হয়ে ওঠে। চারধারটা সুন্দর মনে হয়।
এমনটাই যে ঘটে গেল। রাতারাতি ম্যাজিক। তারপরই অবসাদ থেকে মুক্তি। একটা পাতিলেবু বিক্রি করে তাঁরা দাম পাচ্ছিলেন ২০ থেকে ৩০ পয়সা। যা দিয়ে কার্যত সংসারে কিছুই উপকার হচ্ছিল না। বছর গেলে পাতিলেবু বিক্রি করে রোজগার ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা।
তাই ওড়িশার আঙ্গুল জেলার বিশাল এলাকা জুড়ে সেখানকার পাতিলেবু চাষিরা ক্রমশ পাতিলেবু চাষে উৎসাহ হারাচ্ছিলেন। অনেকেই স্থির করেছিলেন পাতিলেবু গাছ কেটে ওই জমিতে অন্য কিছু চাষে মন দেবেন।
যা থেকে কিছু লাভের মুখ কৃষকরা দেখতে পারবেন। কিন্তু তাঁরা তাঁদের সিদ্ধান্ত থেকে কার্যত রাতারাতি সরে এসেছেন। এখন বরং পাতিলেবু গাছ কীভাবে আরও বাড়ানো যায় সেদিকে মন দিয়েছেন কৃষকরা।
ওড়িশার পাতিলেবু ফলনের সঙ্গে যুক্ত কৃষকদের জীবনের পালে হাওয়া দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আচমকাই দেখা গেছে ওড়িশার আঙ্গুল জেলার পাতিলেবু মার্কিন বাজারে হুহু করে বিকোতে শুরু করেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাই পাতিলেবুর অর্ডার বাড়ছে। ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ পাতিলেবু মার্কিন মুলুকে পাড়ি দিয়েছে। মার্কিন মুলুকে কৃষকদের পাতিলেবু বিক্রি করতে সাহায্য করছে ওড়িশা রুরাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড মার্কেটিং সোসাইটি।
যেখানে কৃষকরা ২০ থেকে ৩০ পয়সায় পাতিলেবু বেচতে বাধ্য হচ্ছিলেন তাঁরা এখন ১ টাকা পিস রেটে লেবু বেচছেন। আমেরিকা বলেই নয়, ব্রিটেনেও এই পাতিলেবুর চাহিদা হুহু করে বাড়ছে।
আগামী দিনে অন্য অনেক দেশও এই পাতিলেবু কেনায় উৎসাহ দেখাবে বলেই নিশ্চিত কৃষকরা। তাই তাঁরা গাছ কেটে ফেলা ভুলে এখন কত দ্রুত এই লেবুর ফলন বাড়ানো যায় সেদিকে মন দিয়েছেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা