গহন অরণ্যে গাছ কাটতেই মিলল ৭টি ঘড়া, প্রত্যেকটি ঘড়ায় লুকিয়ে একের পর এক বিস্ময়
পৃথিবীর ফুসফুস এই অরণ্য। যা চিরকালই মানুষের কাছে এক বিস্ময়। এবার সেখানে আরও এক নতুন আবিষ্কার গোটা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে।

জঙ্গলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এক কৃষক জলাভূমি পরিস্কার করার জন্য গাছ কাটছিলেন। ৫০ ফুটের একটি গাছ কাটতেই অবাক কাণ্ড। গাছটি শিকড় সমেত উপড়ে দেওয়ার সাথে সাথেই নিচ থেকে বার হয় ৭টি বিরাট পাত্র। আকৃতি অনেকটা জালার মত। তবে তাতে মোহর ছিলনা। ছিলনা কোনও গুপ্তধন। তবে যা ছিল তা গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
হঠাৎ এমন কিছুর জন্য তিনি প্রস্তুত ছিলেন না। তাই রীতিমত হকচকিয়ে যান। এদিকে স্থানীয় অধিবাসীরাও গাছটি পড়ার শব্দ শুনে সেখানে ছুটে আসেন। শিকড়ের নিচে পোঁতা ৭টি সেরামিকের কলসি দেখে তাঁরাও অবাক হয়ে যান।
চমকের আরও বড় কারণ হল পাত্রগুলির মধ্যে ছিল মানব দেহাবশেষ। মাছ, ব্যাঙ ও কচ্ছপের কিছু হাড়গোড়ও পাত্রগুলির মধ্যে রাখা ছিল। সবচেয়ে বড় পাত্রটির ওজন ৩৫০ কেজির কাছাকাছি। স্থানীয়রা পাত্রগুলি উদ্ধারের পর সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি দল ঘটনাস্থলে হাজির হয়। তারা পাত্রগুলি ভেঙে ভিতরের বস্তু পরীক্ষা করে দেখে। গবেষণায় জানা যায় বয়সে এগুলি অনেক পুরনো। মধ্য সোলিমোয়েস অঞ্চলের একটি কৃত্রিম দ্বীপে পাত্রগুলি পাওয়া গেছে। দ্বীপটি প্রায় ২ হাজার বছর আগে আদিবাসীরাই তৈরি করেছিলেন।
গবেষকরা জানিয়েছেন এসব দেহাবশেষ সম্ভবত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অংশ ছিল। পাত্রগুলির মুখ কোনও পচনশীল জৈব পদার্থ দিয়ে আটকানো ছিল। যা পরে পচে যাওয়ায় পাত্রগুলির মুখে আর কোনও ঢাকনা ছিলনা।
পাত্রগুলি সবুজ কাদামাটি দিয়ে ঢাকা। গায়ে রয়েছে লাল ডোরাকাটা দাগ। দক্ষিণ আমেরিকার অনেক আদিবাসী সংস্কৃতিতে প্রয়াত ব্যক্তিদের দেহাবশেষ এভাবে কলসিতে ভরে রাখা হত।
পরকালে তাঁদের খাওয়ার সুবিধার জন্যে নৈবেদ্য হিসাবে বিভিন্ন প্রাণি সঙ্গে দেওয়া হত। এই আবিষ্কার অ্যামাজনের আদিবাসীদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পর্কে বিশ্বকে অভিনব এক তথ্য সরবরাহ করল।