বলিভিয়ার সালার দে ইউনি, ছবি - সৌজন্যে - উইকিমিডিয়া কমনস
বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়না। আয়না আর কত বড় হবে! একটা ধারনা করার চেষ্টা তো হতেই পারে। কিন্তু প্রকৃতি যখন নিজে হাতে কোনও কিছু সৃষ্টি করে তখন তা অনেক সময়ই ধারনার বাইরে চলে যায়।
যেমন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আয়নাটা সৃষ্টি হয় সামান্য বৃষ্টিতে। এটা বুঝতে পিছিয়ে যেতে হবে ৪০ হাজার বছর। প্রাগৈতিহাসিক যুগে এখানে ছিল বেশ কয়েকটি দিঘি। অতিকায় সব দিঘি। যার জল একসময় উবে যায়।
জল উবে যাওয়ার পর সেখানে অতিকায় সব গর্ত তৈরি হয়। যেখানে জমাট বাঁধে পাথর আর তার ওপর কয়েক মিটার পুরু নুনের স্তর। ১০ হাজার ৫৮২ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে সেই নুনের স্তরটি হল বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় নুনের ভান্ডার।
এই বহু বহু দূর পর্যন্ত বিস্তৃত নুনের স্তরের আরও একটি বৈশিষ্ট্য হল তা এতটাই সমান যে অবাক করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। কোথাও এতটুকু উঁচু বা নিচু নেই। তার পৃষ্ট সমতল এবং দেখে মনে হবে যেন কেউ হাতে করে সেটির উপরিতলকে একদম সমান করে রেখেছেন।
একটু উঁচু নিচু হলে তিনি যেন হাতে করে সেটিকে সমান করে দেন। আদপে এটি কোনও মানুষের কাজ নয়। প্রকৃতিই এই সমান উপরিভাগের দেখভাল করে।
নুনের এই ভান্ডারের সমান উপরিতলে বৃষ্টি হলে সেই জল ওই সমান তলের ওপর সমানভাবে ছড়িয়ে যায়। তারপর বৃষ্টি থামলে নুনের ওপর পাতলা জলের স্তর তৈরি হয়। যা একদম সমান হওয়ায় তা আয়নার কাজ করে।
প্রকৃতির প্রতিচ্ছবি ১২৯ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সেই অস্থায়ী আয়নায়। নুনের এই ভান্ডারকে বলা হয় ‘সালার দে ইউনি’। বলিভিয়ার পোটোসি অঞ্চলের এই অফুরান লবণ পৃথিবীর এক অন্যতম আশ্চর্যও বটে।