বৃষ রাশির ২০২৬ বছরটা কেমন কাটবে ও কি করলে ভালো থাকবেন
লেখক জ্যোতির্বিদ শিবশংকর ভারতীর কলমে বৃষ রাশির ২০২৬ সালের রাশিফল - কেমন কাটবে ২০২৬ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত তার আগাম ধারনা।
অষ্টাদশ সিদ্ধির নায়ক ধারক ও বাহক সর্বশাস্ত্র প্রবক্তা শুক্রাচার্য। শুধু ত্যাগেই ধর্ম হয় না, ভোগের মধ্যে দিয়েই চলে ত্যাগের সন্ধান। কামনা বাসনা পরিত্যাগ করে কখনও বৈরাগ্যের ভিত্তি স্থাপিত হয় না।
ভোগবাদী হলেও সত্ত্বগুণাশ্রয়ী শুক্র এ সত্য বুঝেছিলেন। রজোগুণে ভরা শুক্রের প্রভাবাশ্রিত রাশি বৃষ। কর্মযোগী শুক্র। কর্মের ভিতর দিয়ে এ রাশির জাতক জাতিকার চলে আত্মপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা।
শুক্রের প্রভাব থাকায় বৃষরাশির জাতক জাতিকাদের মন উদার উন্নত হয়। দুঃখ দুর্দশাকে লাঘব করে অন্তরে নির্মল আনন্দলাভের প্রচেষ্টাই চলে অহরহ। সাহিত্যে শিল্পে শাস্ত্রানুশীলনে শুভ শুক্রের প্রভাব থাকে বৃষ রাশির জাতক জাতিকাদের মধ্যে। জীবন সংগ্রামে এদের পরাজয় খুব কমই ঘটে।
আমার জ্যোতিষশাস্ত্রের শিক্ষাগুরু শ্রীশুকদেব গোস্বামীর গ্রন্থের সাহায্য নিয়ে এই অংশটুকু লেখা হয়েছে। এর সঙ্গে সংযোজন করা হয়েছে নিজের পেশাগত জীবনের বেশ কিছু অভিজ্ঞতার কথা। লেখক চিরকৃতজ্ঞ হয়ে রইল উক্ত গ্রন্থের লেখক ও প্রকাশকের কাছে।
বছরটা কেমন কাটবে : কর্মজীবনে মনের স্বস্তির অভাব থাকবে। সারাবছর কমবেশি একটা বাধা অস্থিরতা প্রায়ই বড্ড বিব্রত করে রাখবে। বিশ্বাস করে ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগ করলে ক্ষতির ভয়টা থাকবে বেশি। পেশা বা চাকরিতে যারা আছেন তাদের সময়টা একেবারেই গতানুগতিক ধারায় চলবে। ব্যবসায়ীদের অর্থাগমটা সুন্দরভাবে হবে না। মাঝে মাঝে বেশ ভালো আবার কখনও চলবে বেশ চাপের মধ্যে দিয়ে। মোটের উপর আর্থিক চাপ একটা থাকবে তবে কোনও ভাবে কোনও কাজটা আটকাবে না অর্থের জন্য। স্বাস্থ্যের কারণে বেশ কিছু অর্থ ব্যয় হবে। মাঝে মধ্যেই স্বাস্থ্য বিব্রত করবে। হার্টের রুগীদের পক্ষে সময়টা কিন্তু উদ্বেগসূচক। অপ্রত্যাশিতভাবে যথেষ্ট অর্থব্যয় বা নষ্ট হবে। এমন কোনও সংবাদ বা যোগাযোগ আসবে না যাতে আপনার আনন্দ বাড়ে। সংসার জীবন এ বছরটা কাটবে শান্তি ও অশান্তির মধ্যে দিয়ে। আত্মীয় ও বন্ধুরা তেমন উপকারে আসবে না। কোথাও বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেও পরে তা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা। পুরনো কোনও আত্মীয় কিংবা বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। উটকো ঝামেলায় অর্থ ও মনের শান্তি নষ্ট হবে। শত্রু দ্বারা ক্ষতির ভয় নেই। দীক্ষিতদের সাধন ভজনে মন বসবে না। ব্যাপারটা ঘটবে একেবারে দায়সারা গোছের। অদীক্ষিতদের দীক্ষার তোড়জোড় করে শেষ মেষ না হওয়ার সম্ভাবনা। এ বছর বার কয়েক নিকট ভ্রমণ ও দেবালয় গমনের যোগ। কোনও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ ও কাউকে আর্থিক সাহায্য দিয়ে উপকার করলে সে অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে দুর্ভোগ হবে। সুতরাং না দেওয়াই ভালো। বিদ্যার্থীদের পক্ষে সময়টা শুভ নয়। মন সংযোগের বড্ড অভাব হবে। যত্নের সঙ্গে শিক্ষা চালানো কর্তব্য। এ বছর আত্মীয় ও বন্ধুরা তেমন কাজে আসবে না। মাঝে মাঝে কাছাকাছি কোথাও না কোথাও বেড়াতে যাবেন। দূরপাল্লায় ভ্রমণে বাধা জন্মাবে। শত্রু দ্বারা ক্ষতির ভয় নেই।
এখানে যে প্রতিকারগুলি রাশি অনুযায়ী করা হল তা শুধুমাত্র এক বছরের জন্য। প্রতিকারগুলি আমার মনগড়া কোনও কথা নয়। বিভিন্ন সময়ে ভারতের নানা প্রান্তে ভ্রমণকালীন পথচলতি সাধুসঙ্গের সময় লোক-কল্যাণে সাধুদের বলা প্রতিকারগুলিই এখানে করা হল।
কি করলে একটু ভালো থাকবেন : প্রতি শনি ও মঙ্গলবার আপনার মুখের এঁটো করা খাবার সারা দিনে একবার একটু কাককে খেতে দেবেন। গোটা বছরে আপনার দেহ মন সংসার ও প্রতিষ্ঠা জীবনে যে সব অসুবিধা ও ভোগান্তি বিব্রত করত, তার বহুলাংশেই নিবৃত্তি এনে আপনাকে অনেক স্বস্তি দেবে।
কি রঙের পোশাক পরবেন : সাদা, একেবারে উজ্জ্বল হাল্কা আকাশি পোশাক চলবে। বিশেষ করে সাদা রঙ দেহ মন সংসার প্রতিষ্ঠা ও যে কোনও শুভ কর্মের ক্ষেত্রে শুভপ্রদ। প্রচেষ্টায় সাফল্য ও মানসিক আনন্দ বাড়বে। বাড়ি ঘরের রং সাদা রাখলে একই ফল হবে।
এবার ব্যক্তিগত রাশি অনুসারে ‘ফল’ কতটা মিলবে সে বিষয়টি খোলসা করে বলা যাক। এখানে যে ফলাফল লেখা হল তা একেবারেই অনুমানভিত্তিক।
নক্ষত্র ভেদে এক এক জাতক-জাতিকার মানসিক গঠন, চিন্তাভাবনা, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, জীবনপ্রবাহ এক একরকম হয়ে থাকে; এর সঙ্গে থাকে জন্মকালীন রাশিচক্রে শুভাশুভ গ্রহের অবস্থান। রাশি এক হলেও নক্ষত্র ইত্যাদি ভেদে ফলাফলের তারতম্যটাই স্বাভাবিক।
অত্যন্ত সূক্ষ্ম বিচার করে ফলাফল লেখা সম্ভব হয় না। প্রত্যেকটা রাশির কোনও একটা নক্ষত্রকে ধরে গড়ে একটা অনুমানভিত্তিক শুভাশুভ ফল লেখা হয়। ফলে কারও ফল মেলে দারুণভাবে, কারও কিছু কিছু, কারও বা একেবারেই নয়।
সব কথা মিলবে, এমনটা ভাববার কোনও কারণ নেই। এখানে রাশির ওপর ভিত্তি করে ভাগ্যফল নিয়ে যা লেখা তা অভিজ্ঞতায় দেখা একটা আভাস মাত্র। এটাই বাস্তব সত্য বলে ধরে নিয়ে চলাটা কোনও কাজের কথা নয়, চলার কারণ আছে বলেও মনে হয় না।






