ভারতীয় নারীর গর্ব বেনারসি শাড়ির শিল্পকলা বৈচিত্র্য এসেছিল দেশের বাইরে থেকেও
কিছু জিনিস থাকে যা বিশেষ কয়েকটি জায়গাতেই তৈরি হয়। পৃথিবীজুড়ে চাহিদা থাকলেও সৃষ্টিশীলতার কারণে যা সকলে তৈরি করতে পারেননা।
প্রাচীন যুগ থেকেই ভারতীয় হস্তশিল্পের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসাবে কাশী তথা বেনারস পরিচিতি পেয়ে আসছে। এই শহরের পরিচয় তৈরি হয়েছে তার বিশ্ববিখ্যাত বেনারসি শাড়ির জন্যও। যা তার জরির কাজ এবং জাঁকজমকের কারণে ভারত তথা গোটা বিশ্বের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
হস্তশিল্পের নিদর্শন হিসাবে বেনারসে তামা ও পিতলের বাসনপত্র, কাচের চুড়ি, কাঠ পাথর মাটির খেলনা দেখতে পাওয়া গেলেও প্রাচীন এই শহরের বিশেষত্ব লুকিয়ে রয়েছে তার শাড়ির কারিগরিতে। জিআই ট্যাগ বা ভৌগোলিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত বেনারসি শাড়ি নিজেকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছে বহুকাল আগেই।
বেনারসি বললেই একধরনের জাঁকজমকপূর্ণ শাড়ি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। যা মূলত বিবাহ এবং পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত।
রামায়ণের সময় থেকেই ভারতীয় শাড়ির উল্লেখ পাওয়া যায়। যদিও বেনারসিতে ব্রোকেড বা জরির কাজের শুরু হয়েছিল মোগল আমল থেকে। জরির কাজের জন্যই বেনারসিতে ফার্সি কাজের প্রভাব দেখা যায়। যা শাড়িটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে সাহায্য করে।
বেনারসিতে সোনা ও রুপোর জরির সাহায্যে ফুল, পাতা, ময়ূর, কলকা, হাতি, ঘোড়া, মানুষ এমনকি জালিকাজের কঠিন নকশাও বোনা হয়। ক্রমবর্ধমান চাহিদার জন্য মেশিনে তৈরি বেনারসির বিক্রি বাড়লেও হাতে বোনা ঐতিহ্যবাহী ব্রোকেড বেনারসির কদরই আলাদা। বর্তমান সময়ের বেনারসি মোগল এবং ভারতীয় নকশার এক অসাধারণ মেলবন্ধনে তৈরি শাড়ি।
প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বেনারসের শিল্পীরা ঐতিহ্যবাহী এই শাড়ির মাধ্যমে ভারতীয় হস্তশিল্পের সংস্কৃতিকে নতুন পথ দেখিয়েছেন। স্থানীয় ঐতিহ্য এবং আধুনিক নকশার মিশেলে তৈরি এই শাড়ি গোটা বিশ্বেই ভারতীয় বিবাহ অনুষ্ঠানের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা













