Feature

রাসায়নিক নয়, নদীর জলে চুবিয়ে পাকা করা হয় কাপড়ের রং, দেশেই রয়েছে এই আশ্চর্য নদী

একটি এমন নদী রয়েছে যার জলে চুবিয়ে নতুন কাপড়ের ওপর করা রংকে দীর্ঘস্থায়ী ও ঝলমলে করা হয়। এমন আশ্চর্য নদী বয়ে গেছে এ দেশের ওপর দিয়েই।

যে কোনও কাপড়ের রংকে দীর্ঘস্থায়ী করতে বা পাকা করতে ডাই ব্যবহার করা হয়। প্রচুর অর্থ ব্যয় করে রাসায়নিক ডাই ব্যবহার হয় বস্ত্রশিল্পে। কিন্তু একটি টাকাও খরচ না করে যদি উন্নতমানের ডাই করা যায় নতুন কাপড়ে! যদি কাপড়ের রং কেবল একটি নদীর জলে কাপড় চুবিয়েই ঝলমলে করে তোলা যায়? তাহলে তো কথাই নেই।

এমনই এক আশ্চর্য নদী বয়ে গেছে ভারতের ওপর দিয়ে। নতুন কাপড়ে রংয়ের প্রলেপের পর সেটিকে ওই নদীর জলে একাধিকবার চোবানো হয়। নদীর জলে এমন এক উপাদান রয়েছে যা প্রাকৃতিক রঞ্জক বা ডাইয়ের কাজ করে। যা কাপড়ের রংয়ের উজ্জ্বলতাও বাড়িয়ে দেয়। রং এতটাই পাকাপোক্ত করে তোলে যে সে রং বহুদিন পর্যন্ত এতটুকু নষ্ট হয়না।

মধ্যপ্রদেশের ধার জেলার বাগ গ্রাম সকলের মুখে মুখে ঘোরে তার অনন্য শিল্পের জন্য। সেই বস্ত্রশিল্প বাগ প্রিন্ট বলে পরিচিত। কাপড়ের ওপর এই ভিন্ন ধারার প্রিন্টটি দেশে ও বিদেশে যথেষ্ট সমাদর পায়।

সিন্ধ প্রদেশ থেকে এই শিল্পকলায় পারদর্শী কয়েকজন শিল্পী কোনও এক সময় এই বাগ গ্রামে এসে উপস্থিত হন। এই গ্রামের গা দিয়ে বয়ে গেছে বাঘিনী নদী। শিল্পীরা এই নদীর জলের ম্যাজিকের কথা কোনওভাবে জানতে পারেন। বুঝতে পারেন এই নদীর জলে এমন কিছু রয়েছে যা প্রাকৃতিক রঞ্জকের কাজ করছে। নদীর বয়ে যাওয়া জলেই রয়েছে ডাইয়ের উপাদান। এটা জানার পর তাঁরা এখানেই থেকে যান। এখানেই এই শিল্পের কাজ শুরু করেন।

বাগ প্রিন্ট কাপড়ের ওপর এমন এক রংয়ের কাজ যে রং কোনও রাসায়নিক দিয়ে তৈরি হয়না। বরং তৈরি হয় বেদানার খোসা, তেঁতুল, গাছের পাতা সহ এমন নানা প্রাকৃতিক জিনিস কাজে লাগিয়ে।

বাগ প্রিন্টের শাড়ি ডাই করার প্রক্রিয়া, ছবি – সৌজন্যে – উইকিমিডিয়া কমনস

রংয়ের কারুকার্যের প্রলেপ পড়ার পর সেই রংকে দীর্ঘস্থায়ী এবং উজ্জ্বল করে তুলতে কাপড়কে বাঘিনী নদীর জলে চোবানো শুরু হয়। একাধিকবার চোবানোর পর অবশেষে কাপড়ের ওপর প্রিন্ট ঝলমল করতে থাকে। এটাই বাগ প্রিন্ট বলে পরিচিত।

বাঘিনী নদীর জলে তামার অস্তিত্ব রয়েছে। জলে তামার মত ধাতব মিশ্রণ থাকায় তা প্রাকৃতিক ডাইয়ের কাজ করছে। বাঘিনীই ভারতের একমাত্র নদী যার জলে মিশে থাকা ধাতব উপাদান এমন প্রাকৃতিক ডাইয়ের কাজ করে।

বর্তমানে এই বাগ প্রিন্টের সঙ্গে যুক্ত শিল্পীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কারণ বাঘিনী নদীর জল ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে। নদীর জলে দূষণের মাত্রাও বাড়ছে। যা তার এই আশ্চর্য ডাই করার ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এখানকার শিল্পীরা।

News Desk

পেঁয়াজ আর রসুনই যত নষ্টের গোড়া, শেষ হয়ে গেল ২২ বছরের বৈবাহিক সম্পর্ক

২২ বছর একসঙ্গে কাটানোর পর অবশেষে তাঁরা বৈবাহিক সম্পর্ক ছেদ করে আলাদা হয়ে গেলেন। আর…

December 13, 2025

প্রেমিকের স্ত্রীর নজর এড়াতে বাড়ির ১১ তলার কার্নিশে ঝুলে রইলেন তরুণী

প্রেমিকের সঙ্গে ফাঁকা ফ্ল্যাটে কাটানোর সময় প্রেমিকের স্ত্রী এসে পড়েছিলেন। তাঁর নজর এড়াতে জীবন বাজি…

December 13, 2025

নজরদারি বাড়াতে সূর্যের হাত ধরে স্থল ও আকাশকে একসঙ্গে কাজে লাগাচ্ছে রেল

যাত্রী সুরক্ষার সঙ্গে কোনওভাবেই আপস করা হবেনা। সেই লক্ষ্যে এবার নতুন উদ্যোগের পথে হাঁটল ভারতীয়…

December 13, 2025

চাহিদা বেড়েই চলেছে, বিক্রিও অনেক, তবু চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে সাবান পাথর শিল্পীদের

সাবান পাথর দিয়ে তৈরি বাসনপত্রের চাহিদা বেড়েই চলেছে। ফলে এই সাবান পাথরের বাসন তৈরির সঙ্গে…

December 13, 2025

গান গায় মরুভূমির বালি, এমন জায়গাও রয়েছে এই পৃথিবীতে

পৃথিবীজুড়ে যে কত আশ্চর্যের মেলা তা গুনে শেষ করা যায়না। এ মানুষ সৃষ্টি করেনি। প্রকৃতির…

December 13, 2025

তুষারপাত কাজে লাগিয়ে চোরাশিকারিদের দৌরাত্ম্য রুখতে হিমালয়ের জঙ্গলে অভিনব পদক্ষেপ

হিমালয়ের দুর্গম অঞ্চলে তুষারপাতের ফলে তৈরি হওয়া প্রতিকূলতাকে নিজেদের প্রয়োজনে কাজে লাগায় চোরাশিকারিরা। গহন জঙ্গলে…

December 13, 2025