Feature

নববধূদের এক রাতের জন্য তুলে আনার শাস্তি, আজও এই কেল্লায় জুতো ছোঁড়েন মানুষ

এ এক অদ্ভুত দৃশ্য। যা প্রতিবছর দেখতে পাওয়া যায়। মহাভারতে বর্ণিত রাজা জরাসন্ধের কেল্লায় আজও জুতো, পাথর ছোঁড়েন দূর দূর থেকে আসা মানুষ।

Published by
News Desk

ভারতের নানা প্রান্তে কত যে চমকে দেওয়ার মত প্রথা প্রচলিত তা হয়তো গুনে শেষ হওয়ার নয়। এমনই এক প্রথা রাজা জরাসন্ধের কেল্লায় জুতো, পাথর ছোঁড়া। এটা একটা প্রথা। একটা প্রচলিত রীতি। প্রতিবছর যা পালিত হয়। আর সেজন্য স্থানীয়রা তো বটেই, শামিল হন বহু দূর দূর থেকে আসা মানুষজন।

এ কাহিনির সূত্রপাত রাজা জরাসন্ধের এই কেল্লায়। মহাভারতে যাঁর প্রাণ যায় মহাবলী ভীমের হাতে। সেই রাজা জরাসন্ধের একটি কেল্লা অবস্থিত হরিয়ানার যমুনানগর জেলার সান্ধ্যানা গ্রামে।

জরাসন্ধ ছিলেন এক অত্যাচারী রাজা। যিনি সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচারই করতেননা, তাঁর অভ্যাস ছিল নববিবাহিত নারীদের বিয়ের পোশাকেই অপহরণ করে কেল্লায় নিয়ে আসা। তারপর তাঁদের সঙ্গে বলপূর্বক এক রাত কাটানো।

কথিত আছে একবার এক ব্রাহ্মণ নববধূকে তিনি তুলে আনেন। কিন্তু সেই রমণী নিজেকে রক্ষা করে জরাসন্ধের হাত থেকে পালাতে সক্ষম হন। নিজের সম্ভ্রম রক্ষা করতে একটি পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ দেন।

সেই অত্যাচারী রাজা জরাসন্ধের কেল্লা রয়েছে এই সান্ধ্যানা গ্রামে। সেখানে প্রতিবছর একটি মেলার আয়োজন হয়। যা কপাল মোচন মেলা নামে পরিচিত। প্রতিবছর কার্তিক পূর্ণিমার সময় এই মেলা হয়।

এই সময় স্থানীয়রা তো বটেই, পঞ্জাব, হরিয়ানা সহ নানা প্রান্ত থেকে মানুষ সেখানে হাজির হন বিশেষ একটি প্রাচীন প্রথার শরিক হতে। যেখানে জরাসন্ধের সেই কেল্লা লক্ষ্য করে মানুষ জুতো, পাথর, লাঠি ছুঁড়তে থাকেন।

কেল্লার দেওয়ালে আঘাতও করতে থাকেন। এটাই প্রথা। যা প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়। রাজা জরাসন্ধের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেওয়ার পাশাপাশি মানুষ সেই পুকুরের জলে স্নান করেন যে পুকুরের জলে নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন সেই নববিবাহিতা ব্রাহ্মণ কন্যা। ওই পুকুরে স্নান করে সতী মন্দিরে পুজোও দেন অনেকে। আর সেই সঙ্গে জরাসন্ধের কেল্লায় জুতো, পাথর ছোঁড়া তো আছেই।

Share
Published by
News Desk