Feature

একমাত্র নদী যার জল কেউ ছোঁয়না, ছুঁলেই নাকি সর্বনাশ

এদেশের বুক দিয়েই এমন এক নদী বয়ে গেছে যার জল কেউ ছুঁতেও ভয় পান। এ নদীর জল স্পর্শও করেননা কেউ। এর পিছনে রয়েছে বিশেষ কারণ।

Published by
News Desk

নদী ছাড়া জীবন অচল। নদীর জলকে ভরসা করেই ভারত সহ পৃথিবীতে অনেক বড় শহর তৈরি হয়েছে। নদীর জলকে পবিত্র বলেই মনে করা হয়। নদীর জল থেকেই পানীয় জল এবং জীবন চালানোর জন্য যাবতীয় জলের প্রয়োজন মেটে।

অথচ ভারতেই এমন এক নদী রয়েছে যা বয়ে যায় ঠিকই, কিন্তু তার জল কেউ স্পর্শ করেনা। এমনকি নদীর ধারে বসবাসকারীরা ভুলেও এ নদীর জলে হাত ছোঁয়াননা।

এমন নয় যে এ নদীর জলে কোনও বিষাক্ত উপাদান আছে বা এ নদীর জলে কোনও ভয়ংকর প্রাণি আছে। এ নদীর জলে কেউ হাত না ছোঁয়ানোর পিছনে লুকিয়ে আছে এক প্রাচীন বিশ্বাস।

এটা বিশ্বাস যে এ নদীর জল স্পর্শ করা মানে সব কাজ পণ্ড হওয়া। এ নদীর নামও তাই কর্মনাশা নদী। মানুষের জীবনে যাবতীয় খারাপ ডেকে আনে এ নদীর জল, এমনটাই বিশ্বাস মানুষের।

কর্মনাশা নদী, ছবি – সৌজন্যে – উইকিমিডিয়া কমনস

কথিত আছে, প্রবল পরাক্রমী রাজা সত্যব্রত তাঁর গুরু বশিষ্ঠ মুনির কাছে একটি বর চান। সত্যব্রত চান তিনি যেন সশরীরে স্বর্গে যেতে পারেন। কিন্তু রাজার এই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন বশিষ্ঠমুনি।

রাজা সত্যব্রত তখন রেগে গিয়ে বিশ্বামিত্র মুনির কাছে হাজির হন। বিশ্বামিত্র মুনির সঙ্গে বশিষ্ঠ মুনির সম্পর্ক ভাল ছিলনা। তাই বিশ্বামিত্র রাজা সত্যব্রতকে সশরীরের স্বর্গারোহণের ব্যবস্থা করে দেন। যা দেখে দেবরাজ ইন্দ্র ক্ষুব্ধ হন।

ইন্দ্র স্বর্গ থেকে রাজা সত্যব্রতর মাথা নিচু করে তাঁকে ফের পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু বিশ্বামিত্র মন্ত্রবলে রাজা সত্যব্রতকে মাঝপথেই আটকে দেন। স্বর্গ ও মর্তের মাঝখানে মাথা নিচু করে ঝুলতে থাকেন সত্যব্রত। সে সময় তাঁর মুখ থেকে লালা রসের স্রোত প্রবাহিত হতে থাকে। সেই লালা রস থেকেই সৃষ্টি হয় এই নদী।

সেই পৌরাণিক কাহিনিই মানুষকে আজও বিহারের কাইমুর জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই কর্মনাশা নদীর জল থেকে দূরে রেখেছে। যদিও এ নদীই প্রবাহিত হয়ে একসময় গঙ্গায় গিয়ে মিশে গেছে।

Share
Published by
News Desk

Recent Posts