প্রতীকী ছবি
আমি জানি, অপ্রকৃতিস্থ ও বিভ্রান্ত হয়ে মানুষ যাবে জ্যোতিষীর কাছে। কারণ সময়ের ঘাতপ্রতিঘাতে জর্জরিত মানুষ কিছু না পেলে শেষ সম্বল জ্যোতিষীকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার জন্য। সমস্যা-জর্জরিত মানুষের সমস্যার কারণগুলো গভীরভাবে খুঁটিয়ে দেখেছি, আজকের মানুষের প্রায় প্রতিটা সমস্যার মূল কারণই হল জীবন ও জীবিকার সংঘাতের ফলে লক্ষ্যচ্যুতি। অধিকাংশেরই আজ সঠিক কোনও লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নেই। যাদের আছে, তাদেরও ঘাতপ্রতিঘাতে লক্ষ্যচ্যুতি ঘটছে।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, গভীরভাবে অনুভব করি, কেউ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্থির করে তীব্র মানসিক শক্তি নিয়ে এগোলে গ্রহরা তার পিছনে ছুটবেই – ছুটতে বাধ্য। কোনও গ্রহরত্ন, তাবিজ, কবচ, মাদুলি, জ্যোতিষীর প্রয়োজন হবে না। মানুষের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রহরত্নের নাম, ‘মানসিক শক্তি’। আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক স্থিতির অভাব হলেই মনের অপমৃত্যু ঘটে আর অক্টোপাসের মতো গ্রহরা তাকে প্রতিমুহুর্তে নিঃশব্দে ঠেলে দেয় মৃত্যুর হিম অন্ধকারে।
এ শুধু কথার কথা নয়, নিজের জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেই বলছি। অতএব সামনে যতই অন্ধকার হোক, অবিচল অকম্পিত লক্ষ্যে এগিয়ে গেলে সামনেই অপার অমৃতময় সুধাসাগর।
কর্মজীবনের বাইরে পেশার চশমা খুলে যখন পৃথিবীর দিকে তাকাই, তখন নিজেকে আর জ্যোতিষী বলে মনে হয় না। মনে হয় আমিও আর সকলের মতো। অন্তরে গভীরভাবে অনুভব করি, দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, পৃথিবীতে যারা বড় হয়েছেন, তাদের মূলমন্ত্রই ছিল কর্ম, একমাত্র সাধনাই ছিল কর্ম। কর্মই মানুষের ভাগ্য তৈরি করে, আনে মুক্তি, বিকাশ ও পরিণত সফলতা। জ্যোতিষী নয় জ্যোতিষশাস্ত্র নয়।