World

নাক কান কেটে, জিভ চিরে ড্রাগন হওয়ার চেষ্টা প্রাক্তন ব্যাঙ্ক আধিকারিকের

Published by
News Desk

“জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে?” বঙ্গদেশের মধুকবির এই জীবনসত্যের সঙ্গে কোনোভাবেই পরিচয় হয়নি মেডুসার। তা সত্ত্বেও জীবনের নশ্বরতার দিকটি গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলেছিল তাঁকে। সংক্ষিপ্ত জীবনে ব্যতিক্রমী ছাপ রেখে যেতে হবে। আর সেই ছাপ রাখতে গিয়ে সারা শরীর জুড়ে সরীসৃপের ট্যাটু আঁকালেন তিনি। নিজেকে ‘ড্রাগন লেডি’ বানিয়ে দুনিয়া জুড়ে শোরগোল ফেলে দিলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় ছেলে মার্কোস হার্নান্ডেজকে নিয়ে মেডুসার সুখের সংসার। সাল ১৯৯৭। মেডুসা তখন আমেরিকার একটি ব্যাঙ্কের উচ্চপদস্থ আধিকারিক। ব্যাঙ্কের সহকর্মীরা অবশ্য তখন তাঁকে অন্য নামে, অন্য পরিচয়ে চিনতেন। সেইবছর মেডুসা জানতে পারেন, তাঁর শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে এইচআইভি। সে কথা জানতে পারার পর সহকর্মীদের আচরণ হঠাৎ পাল্টে যেতে দেখেন মেডুসা।

বাবা-মা তো তাঁকে আগেই ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। এবার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়পরিজনদের অবহেলা জীবন সম্পর্কে তাঁর ধারণাই বদলে দেয়। মৃত্যু তাঁর চোখে ধরা পড়ে এক ভিন্ন মাত্রায়। মরতে যখন একদিন হবেই, তখন মানুষের বেশে মরে কাজ নেই। বরং কোনও প্রাণি রূপে মরাই ভালো। এই চিন্তা নিত্য কুড়ে কুড়ে খেতে থাকে মেডুসাকে।

অনেক ভেবেচিন্তে মেডুসা সিদ্ধান্ত নেন মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে নিজের মত করে বাঁচবেন তিনি। চাকরি সূত্রে অনেক টাকা জমেছিল। সেই পুঁজিতে ভর করে চলতে লাগল তাঁর সংসার আর নতুন পরিচয়ের খোঁজ।

এতদিন মেডুসাকে সকলে চিনতেন সুপুরুষ রিচার্ড হার্নান্ডেজ নামে। সেই পরিচয় তিনি পাল্টে ফেললেন। একাধিক যন্ত্রণাদায়ক অস্ত্রোপচারের সাহায্যে মনে-প্রাণে-শরীরে রিচার্ড হয়ে উঠলেন নারী। নিজের নাম রাখলেন ইভা তিয়ামেত বাফোমেত মেডুসা। শুধু তিনি একা নন, অস্ত্রোপচারের সাহায্য ছেলে মার্কোসকেও করে তুললেন নারী। কিন্তু এতেও মানসিক স্বস্তি পেলেননা রিচার্ড ওরফে মেডুসা। মানব রূপ একসময় অসহ্য হয়ে উঠল তাঁর কাছে। ২০১২ সালে অস্ত্রোপচার করিয়ে কেটে ফেললেন নাক এবং দুই কান। ট্যাটু পার্লারে গিয়ে মুখ ও সারা শরীরে আঁকালেন সরীসৃপের ট্যাটু। যাতে তাঁকে দেখতে লাগে একেবারে ড্রাগনের মতো।

এটুকুতেই ক্ষান্ত হল না মেডুসার জান্তব রূপ পাওয়ার লড়াই। একদম নিখুঁত ড্রাগন হয়ে উঠতে দাঁত তুলে ফেললেন মেডুসা। কপালে দুই দিকে অস্ত্রোপচার করে বসালেন মাংসল শিং। চিরে ফেললেন নিজের জিভ। ঠিক একেবারে সরীসৃপের মত। চোখের ভিতরের সাদা অংশ পাল্টে ফেললেন ঘন সবুজ রঙে। ড্রাগন মানবী হতে খসে গেল কয়েক লক্ষ টাকা। সে নিয়ে অবশ্য সাতপাঁচ ভাবেননি মেডুসা। ড্রাগনের চেহারা পেয়ে এখন বেজায় খুশি তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সগর্বে তিনি নিজের পরিচয় দেন ‘ড্রাগন লেডি’ হিসাবে। ফেসবুকে তাঁর প্রথম জীবনের ছবি এবং এখনকার ড্রাগন লুকের ছবি রীতিমত হইচই ফেলে দিয়েছে। বেড়েছে ফ্যান ফলোয়ারের সংখ্যা। যদিও মেডুসার এমন উদ্ভট বিপদজনক পরীক্ষানিরীক্ষার কুফল নিয়ে নেটিজেনদের সতর্ক করে দিয়েছেন মনোবিদরা।

Share
Published by
News Desk
Tags: Arizona

Recent Posts